সোমবার সিঙ্ঘু সীমানায় কেরজীবাল।
বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার দেশ জুড়ে ভারত বন্ধ পালিত হচ্ছে। তার মধ্যেই এ দিন সকালে দিল্লি পুলিশের তরফে অরবিন্দ কেজরীবালকে গৃহবন্দি করা হয় বলে অভিযোগ করে আম আদমি পার্টি (আপ)। তাদের অভিযোগ, কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই কেন্দ্রের নির্দেশ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। যদিও কেজরীকে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লিতে চার ঘণ্টাব্যাপী চাক্কা জ্যাম শুরু হওয়ার আগে মঙ্গলবার সকালে আপের টুইটার হ্যান্ডল থেকে কেজরীবালের গৃহবন্দি হওয়ার বিষয়টি সামনে আনা হয়। লেখা হয়, ‘বিজেপির দখলে থাকা দিল্লি পুলিশ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে গৃহবন্দি করেছে। কারণ গতকালই সিঙ্ঘু সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন উনি। এই মুহূর্তে ওঁর বাসভবনে কারও প্রবেশ এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসার অনুমতি নেই’।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনেই রয়েছে দিল্লি পুলিশ। তাই অমিত শাহের নির্দেশেই কেজরীবালকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে অভিযোগ আপ নেতৃত্বের। যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। উত্তর দিল্লির ডিসিপি অ্যান্টো আলফোনসে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করা হয়নি। ওঁর বাসভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে মাত্র, যাতে আপের সঙ্গে অন্য কোনও দলের সংঘর্ষ না বাধে।’’
কিন্তু পুলিশের যুক্তি খারিজ করেছে আপ। তাদের অভিযোগ, রাজধানীর তিন মেয়রকে কেজরীবালের বাসভবনের সামনে নিয়ে হাজির হয়েছে পুলিশ। তাঁদের দিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিক্ষোভ করানো হচ্ছে, যাতে মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করার পিছনে যুক্তি সাজানো যায়। সেই মতো ব্যারিকেড দিয়ে বাসভবনের সামনের অংশটুকু ঘিরে ফেলা হয়েছে। পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত কর্মসূচিও বাতিল করা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে কেজরীর বাড়ির সামনে ধস্তাধস্তিও শুরু হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি বাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি। তাঁর বাড়িতে কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হয়নি।
গত ২৩ দিন ধরে রাজধানী দিল্লি এবং সংলগ্ন পঞ্জাব ও হরিয়ানা সীমান্তে কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। মঙ্গলবার সিঙ্ঘু সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান কেজরীবাল। তবে তা নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, আইন চালু হওয়ার পর তা কার্যকর করতে বিজ্ঞপ্তিও জারি করে দিয়েছিল কেজরীবাল সরকার। কিন্তু হাওয়া অন্য দিকে বইতে দেখে অবস্থান পাল্টে ফেলেন তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্জাবে দলের ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই কৃষকদের প্রতি লোকদেখানো দরদ দেখাতে ছুটে গিয়েছেন তিনি।