এ ভাবেই ঘোড়ায় চড়ে অফিসে হাজির হয়েছিলেন রূপেশ কুমার বর্মা।
একটি বহুজাতিক সংস্থার সামনে ঘোড়ার পিঠে বসে আছেন এক যুবক। ঘোড়ার পিঠ থেকে একটা প্ল্যাকার্ড ঝুলছে। তাতে লেখা রয়েছে— ‘সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে অফিসে আজই আমার শেষ দিন’। এই ছবিই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
যাঁকে নিয়ে নেটিজেনরা এত হইচই করছেন তিনি রাজস্থানের পিলানির বাসিন্দা রূপেশ কুমার বর্মা। কর্মসূত্রে গত পাঁচ বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে রয়েছেন তিনি। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। শহরেরই একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবারই ছিল ওই অফিসে কাজ করার শেষ দিন। আর ওই দিনই তিনি ঘোড়া নিয়ে সটান হাজির হয়েছিলেন অফিসে।
ঘোড়া নিয়ে অফিসে এসেছেন বলেই কি এত হইচই? নেটিজেনদের কাছে অবশ্য সেটা একটা দিক হতে পারে। কিন্তু রূপেশের এ ভাবে অফিসে আসার পিছনে অবশ্য কারণ একটাই, তা হল শহরের হাঁসফাস করা যানজট। ঘোড়ায় চড়ে এসে এ ভাবেই যানজটের হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা ফুটিয়ে তুলেছেন রূপেশ।
আরও পড়ুন: বেঁচে থাকার ‘চ্যালেঞ্জ’ হেরে গেলেন বুখারি
টেক শহর হলেও বেঙ্গালুরুতে যানজটের সমস্যা নিত্য দিনের। আর পাঁচ জনের মতো রূপেশকেও গাড়ির সমুদ্র পেরিয়ে অফিসে আসতে হয়। কিন্তু সেই অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয় তাঁর। বাড়ি থেকে অফিস পৌঁছতে নাকানি-চোবানি খেতে হয়।কিন্তু এ ভাবে আর কত দিন! তখনই মাথায় আসে ঘোড়ায় চড়ে যাতায়াতের বিষয়টি। যেই ভাবা অমনি কাজ। ঘোড়ায় চড়া শিখেও ফেলেন রূপেশ। ভেবেছিলেন গাড়িতে যে হ্যাপা পোহাতে হয়, ঘোড়ায় গেলে অন্তত সেই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। না, সেটি অবশ্য হয়নি। বাড়ি থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল ৭টায় বেরিয়েছিলেন রূপেশ, অফিসে পৌঁছন দুপুর দু’টোয়! রূপেশ বলেন, “তিনি নিরামিষাশী, পশু ভালবাসেন। আর তাই ঘোড়াকেই প্রতিবাদের ভাষা হিসাবে বেছে নিয়েছেন।”
আরও পড়ুন: ৭২ বছরের বৃদ্ধার টাইপিং স্পিড দেখলে চমকে যাবেন!
শুধু যানজট নয়, দেশের অনেক সমস্যাই বিব্রত করে তাঁকে, জানান রূপেশ। বলেন, “আমরা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা বহুজাতিক সংস্থার হয়ে অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করি। কিন্তু দেশের এ সব জটিল ব্যাধির উপশমে কেন সচেষ্ট হই না?” তাই তিনি দেশের হয়ে কিছু করতে চান। আর সে কারণেই চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।রূপেশ আরও বলেন, “প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। অটোচালক, ট্রাকচালকদের হয়ে প্রতিবাদ করার জন্য ইউনিয়ন আছে, কিন্তু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের হয়ে গলা ফাটানোর কেউ নেই। বড় সংস্থাগুলো তাঁদের কর্মীদের প্রতি নজর দেন না। অস্বাভাবিক চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়।”এ সব চিন্তাভাবনা করেই রূপেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারও গোলামি নয়, নিজেই সংস্থার মালিক হতে চান।