অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা নিয়ে কেন্দ্র নিযুক্ত কমিটির রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালে কাছে জমা দেওয়া হবে। —ফাইল চিত্র।
অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা নিয়ে কেন্দ্র নিযুক্ত কমিটির রিপোর্ট তৈরি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সময় দিতে না পারায় এখন তা অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রিপোর্টে কী রয়েছে, সরকারি ভাবে কেউ তা নিয়ে মুখ খুলছেন না। কিন্তু ‘অসমিয়ার সংজ্ঞা’ যে তাঁরা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা কমিটি জানিয়েছে। আর এই সংজ্ঞাকে হাতিয়ার করে বাঙালিদের প্রায় সমস্ত নাগরিক অধিকার খর্ব করার কৌশল আঁটা হয়েছে, তা কমিটির সদস্যদের হাবেভাবে স্পষ্ট। আর তা নিয়েই উদ্বেগে অসমের বাঙালিরা।
পরিস্থিতি আঁচ করেই বরাকের বাঙালিরা জোট বাঁধছেন। গতকাল স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থা। এনআরসি প্রক্রিয়ার শুরু থেকে তারা সেবাকেন্দ্র খুলে আম-জনতার পাশে রয়েছে। এনআরসিতে অধিকাংশ বাঙালি নিজেদের ভারতীয় প্রমাণে সক্ষম হওয়ায় এখন তাদের দাঁড় করানো হয়েছে এই ৬ নম্বর ধারার সামনে। বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, পৃথক বরাক দাবি কমিটি, বরাক ভ্যালি হিউম্যান রাইটস সোসাইটি, আর্য সংস্কৃতি বোধনী সমিতি, বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট প্রভৃতি বিভিন্ন সংগঠন জোট বেঁধে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে যে তাদের অধিকারও খর্ব হবে, সেটা তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝিয়ে বলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইনি লড়াইয়ের জায়গাগুলি ভাল করে খতিয়ে দেখার জন্য আইনজীবী নীলাদ্রি রায়, ইমাদুদ্দিন বুলবুল এবং সৌমেন ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আহ্বায়ক সংস্থার সভাপতি লক্ষণ দাস বলেন, ‘‘সবাই জোট বেঁধে লড়লে জয় অনিবার্য।’’ পৃথক বরাক দাবি কমিটির প্রধান শুভদীপ দত্ত বলেন, ‘‘তা না হলে পৃথক রাজ্যের দাবিতে সকলকে ঝাঁপাতে হবে।’’
আরও পড়ুন: নিলামে উঠছে নীরব মোদীর বাজেয়াপ্ত সামগ্রী, তালিকায় হুসেনের ছবিও
বাঙালিদের অধিকার রক্ষার স্বার্থে জোট বাঁধল অসমের বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের তিনটি শাখা। যৌথ মঞ্চ জানিয়েছে, অসম চুক্তির ষষ্ঠ ধারা রূপায়ণ কমিটি অসমিয়া চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ হিসেবে সুপারিশ মেনে নেবে না। মঞ্চের সভাপতি সহদেব দাস জানান, বাংলাদেশের যুদ্ধের সময়ও ভারত সরকার বাঙালিদের অসমে আশ্রয় দিয়েছে। এখন চুক্তি রূপায়ণের নামে অধিকার খর্ব করা চলবে না।