সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আইনসভার উপর ছেড়ে দেওয়াই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (বিসিআই)। প্রতীকী চিত্র।
সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার সংক্রান্ত ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়ে শীর্ষ আদালত কোনও সিদ্ধান্তে না পৌঁছলেই ভাল। এই ধরনের সিদ্ধান্ত আইনসভার উপর ছেড়ে দেওয়াই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (বিসিআই)। রবিবার সব রাজ্যের বার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রস্তাবও পাশ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিসিআইয়ের আবেদন, সমলিঙ্গে বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আইনসভার উপরেই ছেড়ে দেওয়া হোক।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে এক গুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছে সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার চেয়ে। তা নিয়ে শুনানি চলছে ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে। কেন্দ্রীয় সরকার শুরু থেকে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাদের মত, এটা নেহাতই শহুরে অভিজাত ব্যাপারস্যাপার। আইনসভার উচিত, বিষয়টি নিয়ে আরও ভাল করে ভাবা এবং সব ধরনের মতামত খতিয়ে দেখা। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় অবশ্য কেন্দ্রের মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। বলেওছেন, ‘‘সমকামিতা যে কেবল শহুরে বিষয়, এমন কোনও পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে।’’
শুনানি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি নিয়ে নানা রকম মত, পাল্টা মত উঠে এসেছে। তার মধ্যেই বিবৃতি জারি করে বিসিআই-এর বক্তব্য, ভারত বৈচিত্র্যে ভরা একটি দেশ। সেখানে মৌলিক সামাজিক কাঠামোয় আঘাত লাগতে পারে, এমন যে কোনও বিষয়ে মীমাংসা আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হওয়া উচিত। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত কোনও সিদ্ধান্ত নিলে, তা দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। বিসিআই-এর মত, বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক গোষ্ঠী-সহ সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আইনসভারই এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো উচিত।
ঘটনাচক্রে, সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতের এক্তিয়ারের মধ্যে রয়েছে কি না, তা নিয়ে সওয়াল করেছে কেন্দ্রও। যুক্তি ছিল, নতুন সামাজিক সম্পর্ক তৈরির বিষয়টি সংসদই বিচার করে দেখতে পারে। প্রধান বিচারপতি অবশ্য তখন জানিয়ে দেন, কোন বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তা আদালতকে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। আদালত সমলিঙ্গ বিবাহ নিয়ে আর্জি শুনতে আগ্রহী। বিশেষ বিবাহ আইনের পরিধির মধ্যেই এই বিষয়টি বিচার বিবেচনা করতে চাইছেন তাঁরা।