পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির চাইবাসা মামলায় জামিন পেলেন লালুপ্রসাদ যাদব। —ফাইল চিত্র
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত চাইবাসা ট্রেজারি মামলায় লালুপ্রসাদের জামিন শুক্রবার মঞ্জুর করল ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট। তবে সবক’টি মামলায় জামিন না হওয়ায় আপাতত জেলেই থাকতে হবে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
আর এই কারণেই গত ৪০ বছরের মধ্যে এই প্রথম বিহারের ভোটপ্রচারের ময়দানে অনুপস্থিত থাকবেন লালুপ্রসাদ। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত লালু ২০১৮-র জানুয়ারি থেকে জেলে রয়েছেন। তবে মোট সাজার অর্ধেক কাটিয়ে ফেলার পর সম্প্রতি একের পর এক মামলায় জামিন পাচ্ছেন তিনি। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির সব ক’টি মামলায় জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। ৯ নভেম্বর দুমকা ট্রেজারি সংক্রান্ত শেষ মামলাটির শুনানি রয়েছে। ঘটনাচক্রে তার পরের দিনই বিহার বিধানসভার ভোটগণনা। ফলে ওই মামলায় তিনি যদি জামিন পেয়েও যান, তা হলেও প্রচারের ময়দানে আর নামতে পারবেন না। তাঁকে বাদ দিয়েই শরিকদের পাশে নিয়ে প্রচার চালাতে হবে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-প্রধান তথা লালুর ছেলে তেজস্বীকে।
অথচ এই প্রচারে থাকতে মরিয়া ছিলেন লালু নিজে। ২০১৫-য় নীতীশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে পাশে নিয়ে ‘মহাগঠবন্ধন’ গড়ে বিজেপির বিহার দখলের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি। সংখ্যার বিচারে নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর থেকে বেশি আসন পেলেও মুখ্যমন্ত্রিত্বের কুর্সি ছেড়ে দিয়েছিলেন নীতীশকে। ছেলে তেজস্বী হয়েছিলেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আচমকাই লালুর দলের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে পুরনো সঙ্গী বিজেপির হাত ধরেছিলেন নীতীশ। বিধানসভায় ট্রেজারি আসন থেকে সরে রাতারাতি বিরোধী আসনে বসতে হয়েছিল লালুর দলের বিধায়কদের। তখনই লালু বলেছিলেন, সময় এলে মানুষ নীতীশের এই বিশ্বাসঘাতকতার জবাব দেবেন। জবাব দেবেন তিনি নিজেও। কিন্তু সেই তিনিই গরহাজির থাকছেন ভোটপ্রচারে।
নীতীশ-নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের সঙ্গে লালুর টক্কর এ বার আর হল না। যা নিয়ে উদ্বেগে গোটা বিরোধী শিবির। বিশেষ করে আরজেডি। রঘুবংশ প্রসাদের মতো ঘনিষ্ঠতম সঙ্গীর দলত্যাগ ও মৃত্যু, তাঁর ছেলের নীতীশের দলে যোগ দেওয়া, আরজেডি-র অন্তর্কলহ-সহ একাধিক বিষয় চিন্তা বাড়াচ্ছে তাদের। বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, করোনা, বেকারি, বন্যা সব মিলিয়ে বিহারের যা পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে, তাতে লালু ময়দানে নামলে বিহার ভোটের ছবিটা বদলাতে পারত। কিন্তু সেটা আর হল না। লালু আপাতত জেলেই।