উন্নাওয়ের গ্রামে নির্যাতিতার শেষকৃত্য। ছবি: পিটিআই
২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য। সরকারি টাকায় বাড়ি। উত্তরপ্রদেশ সরকারের দুই প্রস্তাবই ফিরিয়ে দিয়ে দ্রুত বিচারের আর্জি জানাল উন্নাওয়ের নির্যাতিতার পরিবার। নিহত তরুণীর বাবার বক্তব্য, ‘টাকা-বাড়ি চাই না। অপরাধীদের সাত দিনের মধ্যে বিচার নিশ্চিত করুন।
গত বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানির জন্য যাওয়ার পথেই উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা হয়। আর শনিবারই দিল্লির এইমস হাসপাতালে মারা যান ওই তরুণী। অভিযোগ, জামিনে ছাড়া পাওয়া শিবমই তার সঙ্গীদের নিয়ে তরুণীকে হত্যার ছক কষেছিলেন। পরে অবশ্য গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, জামিন পাওয়ার পর থেকেই নির্যাতিতার পরিবারের লোকজনকে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন, ভয় দেখাচ্ছিলেন। পুলিশকে তাঁরা সে কথা জানিয়েওছিলেন। তরুণীর মৃত্যুর পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ-প্রশাসন। প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ নিহত-নির্যাতিতার পরিবার-পরিজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা। সেই ক্ষোভের ক্ষতে প্রলেপ দিতেই ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সেই সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের জন্য সরকারি টাকায় পাকা বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিচার হবে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে, জানায় সরকার।
কিন্তু নির্যাতিতার বাবা সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে রবিবার স্পষ্ট জানিয়ে বলেন, ‘‘আমরা টাকা-বাড়ি চাই না।’’ তেলঙ্গানা এনকাউন্টারের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই সাত দিনের মধ্যে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করুক পুলিশ-প্রশাসন।’’ নির্যাতিতা তরুণীর বোন বলেন, ‘‘আরা চাই যোগী স্যর আমাদের দেখে যান এবং এখনই সিদ্ধান্ত নিন। আমার একটা সরকারি চাকরি দেওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: উন্নাওয়ের ছায়া ত্রিপুরায়, কিশোরীকে টানা দু’মাস ধরে ধর্ষণ, শেষমেশ পুড়িয়ে মারল প্রেমিক
আরও পড়ুন: কাকভোরে দিল্লিতে কারখানায় ভয়াবহ আগুন, দমবন্ধ হয়ে অন্তত ৪৩ শ্রমিকের মৃত্যু
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে উন্নাওয়ের ২৩ বছরের তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ বছর মার্চ মাসে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। ঘটনায় গ্রেফতার হন পাঁচ জন। গত ২৫ নভেম্বর জামিন পান অন্যতম অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদী। এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ শিবমের জামিন দিয়ে শর্ত দিয়েছিল, ‘‘আবেদনকারী (শিবম) কোনও ভাবেই সাক্ষীদের প্রভাবিত করা, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা বা জামিনের স্বাধীনতার অপব্যবহার করতে পারবেন না।’’ সরকার পক্ষের আইনজীবী বিরোধিতা করলেও তাঁর জামিন মঞ্জুর করে বেঞ্চ। কিন্তু জামিন পাওয়ার ১০ দিনের মাথাতেই নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ ধর্ষণে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।