বাবুলালেই ভরসা, ভোটে তৃণমূল

মমতা নয়, ঝাড়খণ্ডে তৃণমূলের লড়াইয়ের মুখ এ বার জেভিএম নেতা বাবুলাল মরান্ডি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাবুলালকে জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেই ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল তৃণমূল। জোট চূড়ান্ত হওয়ার পর তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি বন্ধু তিরকে জানান, “৮১টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে তৃণমূল লড়বে। তার মধ্যে ছ’টি আসন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। অন্য সাতটি আসন নিয়ে আলোচনা চলছে।”

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রাঁচি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৩
Share:

মমতা নয়, ঝাড়খণ্ডে তৃণমূলের লড়াইয়ের মুখ এ বার জেভিএম নেতা বাবুলাল মরান্ডি।

Advertisement

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাবুলালকে জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেই ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল তৃণমূল। জোট চূড়ান্ত হওয়ার পর তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি বন্ধু তিরকে জানান, “৮১টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে তৃণমূল লড়বে। তার মধ্যে ছ’টি আসন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। অন্য সাতটি আসন নিয়ে আলোচনা চলছে।” প্রথম দফার নির্বাচনে লাতেহার জেলার মনিকা আর গুমলা জেলার গুমলা বিধানসভা আসনে লড়বে তৃণমূল। তা ছাড়া রাঁচি জেলার কাঁকে, খিজরি আর মাণ্ডার এবং খুঁটি জেলার তোরপা আসনটিতে তৃণমূল লড়বে।

এর আগের বিধানসভা নির্বাচন এবং গত লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখকে সামনে রেখেই লড়েছিল তৃণমূল। প্রচারেও তৃণমূল প্রার্থীরা মমতার ছবি নিয়ে নিজের নিজের এলাকায় ঘুরেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার ‘মা-মাটি-মানুষ’ স্লোগান ঝাড়খণ্ডে বদলে হয়েছিল জল-জঙ্গল-জমিন। সঙ্গে মমতার নাম ও ছবি। তা সত্ত্বেও তৃণমূল প্রার্থীদের জমানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল সব আসনেই।

Advertisement

তাই কী শুধু মমতার মুখে আর আস্থা রাখতে পারছেন না রাজ্য তৃণমূল? উত্তর এড়িয়ে দলের সভাপতি বন্ধু তিরকে বলেন, “বিষয়টি এ ভাবে না দেখাই ভাল। রাজনীতিতে প্রত্যেকেরই প্রত্যেককে প্রয়োজন। মমতাদি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ। বাবুলালজিও তাই। শুধু মাত্র বাবুলালজির নামেই এ রাজ্যের অনেক জায়গায় ভোট হয়ে যায়। রাজনৈতিক প্রয়োজনেই এই জোট দরকার ছিল।”

রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরান্ডির সঙ্গে তৃণমূল কয়েক মাস ধরেই জোট বাঁধার চেষ্টা করছিল। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা আর বিজেপির সঙ্গে বাবুলালের জোটের সম্ভাবনা ছিল না। কংগ্রেসের কাছে বাবুলালের প্রস্তাব ছিল, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করেই জোট গড়তে হবে। কংগ্রেসের পক্ষে তা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। ফলে বাবুলাল বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে একা হয়ে যাবেন তার একটা আগাম আভাস ছিলই। অন্য দিকে, তাঁর দলের ১১ বিধায়কের মধ্যে আট জনই হয় বিজেপি, নয়তো জেএমএমে গিয়ে নাম লেখানোয় আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েন বাবুলাল। সেই সুযোগে বাবুলালকে পাশে পেতে আদা জল খেয়ে মাঠে নামেন তৃণমূল নেতা মুকুল রায় আর বন্ধু তিরকে।

জেভিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ যাদব বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে আমাদের আসন সমঝোতা হচ্ছে। মার্কসিস্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি (এমসিসি)-র সঙ্গেও আলোচনা চলছে। দু’দলই বাবুলালজির নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে।” জেভিএম এ পর্যন্ত চৌত্রিশটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ঝাড়খণ্ড রাজনীতির কুশীলবরা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন: এই জোটের ফলে বাবুলালের থেকেও বেশি সুবিধে হল তৃণমূলের। বাবুলাল মরান্ডির স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। আদিবাসীদের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। তৃণমূল তার ফায়দা কতটা তুলতে পারে এখন সেটাই দেখার।

বিজেপি-র সঙ্গে আজ ‘অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের’ (আজসু) জোটও চূড়ান্ত হয়েছে। বিজেপি-র সঙ্গে জোটের আগ্রহে আজসু নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতো তাঁদের জেতা আসন হাটিয়াও বিজেপি-কে ছেড়ে দিয়েছেন। এই নিয়ে আজসু-র মধ্যে তীব্র মতবিরোধ শুরু হয়েছে। সুদেশের কুশপুতুলও পুড়িয়েছেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র প্রদীপ সিনহা বলেন, ৮টি আসন আজসুকে ছাড়া হচ্ছে। এর মধ্যে আগের নির্বাচনে জেতা আজসুর পাঁচটি আসন রয়েছে। বাকি তিনটিও খুব শীঘ্র চূড়ান্ত হয়ে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement