(বাঁ দিকে) বাবা সিদ্দিকি। বাবা সিদ্দিকিকে খুনে মূল অভিযুক্ত শিবকুমার (ডান দিকে) । ছবি: সংগৃহীত।
মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকি বা তাঁর পুত্র জিশান যিনিই আগে বেরোবেন, তাঁকেই যেন নিশানা করা হয়। শুটারদের কাছে এমনই নির্দেশ এসেছিল। মূল অভিযুক্ত শিবকুমার গৌতমকে জেরা করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি মুম্বই পুলিশের।
নেপালে পালানোর আগে রবিবার উত্তরপ্রদেশের বহরাইচ থেকে শিবকুমার এবং তাঁর চার সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, নির্দেশ এসেছিল লরেন্সের ভাই আনমোল বিশ্নোইয়ের কাছ থেকে। এক তদন্তকারী আধিকারিকের দাবি, শিবকুমার তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন, আনমোলের কাছ থেকে নির্দেশ এসেছিল, বাবা সিদ্দিকি বা জিশান যাঁকেই আগে দেখা যাবে, তাঁর উপরই যেন হামলা চালানো হয়।
শুধু তা-ই নয়, পুলিশ সূত্রে খবর, শিবকুমারকে দায়িত্ব দেওয়ার সময় বোঝানো হয়েছিল, যে কাজ তিনি করতে চলেছেন, সেটি বিশ্নোই সমাজ এবং ঈশ্বরের স্বার্থে। যে তিন শুটারকে পুলিশ আগে গ্রেফতার করেছে, তাঁদের মোবাইলে জিশানের ছবি পাওয়া গিয়েছিল। ফলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, এই হামলার লক্ষ্য ছিলেন জিশানই। জেরায় পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করার পর নিজের জামা বদলে ফেলেছিলেন শিবকুমার। এমনকি, কেউ যাতে সন্দেহ করতে না পারেন, তার জন্য ওই ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলের কাছেই বেশ কিছু ক্ষণ ঘোরাফেরাও করেন। তার পর সুযোগ বুঝে ঘটনাস্থল থেকে অটোতে চেপে কুরলা যান। সেখান থেকে ট্রেনে করে ঠাণে পৌঁছন। ঠাণে থেকে ট্রেন বদলে পুণের উদ্দেশে রওনা হন। সেই সফরের মাঝপথে নিজের মোবাইল ফেলে দিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, পুণেয় সাত দিন ছিলেন শিবকুমার। তার পর উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি যান। সেখানে আরও পাঁচ দিন ছিলেন। তার পর লখনউয়ে আসেন। সেখান থেকে একটি মোবাইল কেনেন। লখনউয়ে ১১ দিন থাকার পর বহরাইচে তাঁর এক পরিচিতের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি শিবকুমারকে আত্মগোপনের আশ্রয় খুঁজে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। শিবকুমারের পরিবার-সহ ৪৫ জনের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল পুলিশ। জেরা করে তাঁদের মধ্যে চার জনকে চিহ্নিত করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই চার জন শিবকুমারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন। তাঁদের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছিল। এই চার অভিযুক্ত বহরাইচের নানপাড়ায় শিবকুমারের সঙ্গে দেখা করতে যেতেই তাঁদের সকলকে হাতেনাতে ধরে ফেলে উত্তরপ্রদেশ এবং মুম্বই পুলিশের যৌথ দল।
গত ১২ অক্টোবর জিশানের অফিসের বাইরে খুন হন বাবা সিদ্দিকি। এই খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত-সহ ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।