জ়াফরিয়াব জিলানি। ছবি: পিটিআই।
শুরু করেছিলেন ফৈজ়াবাদ আদালতে। প্রায় চার দশক পর শেষ করলেন দেশের শীর্ষ আদালতে। তবে ‘দুঃখী নায়ক’ হিসেবেই ইনিংস শেষ করলেন বাবরি মসজিদ আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী, পেশায় আইনজীবী জ়াফরিয়াব জিলানি। ৬৯ বছরের জিলানি বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা-আহ্বায়ক। রামমন্দির-বাবরি মসজিদ মামলায় ৭০-এর দশক থেকেই তিনি যুক্ত। মামলার কাজে নিম্ন আদালত থেকে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ সার্কিট বেঞ্চ, দৌড়ে বেরিয়েছেন অক্লান্ত জিলানি। শনিবার তাঁর সেই দৌড় শেষ হল নয়াদিল্লির তিলক মার্গে, সুপ্রিম কোর্টের এক নম্বর আদালত কক্ষে।
১৯৮৯ সালে দলের পালামপুর বৈঠকে অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিজেপি ‘জন্মস্থানে রামমন্দির তৈরিতে’ সামিল হল। তবে তা গতি পেল লালকৃষ্ণ আডবাণীর প্রথম রথযাত্রায়। কার্যত সেই থেকে সংবাদপত্রের শিরোনামে অযোধ্যা বিতর্কের মাথাচাড়া দেওয়া। আর সেই থেকেই খবরে জিলানি। সাংবাদিকদের ভরসা ছিলেন তিনি। কোনও তথ্য প্রয়োজন, লখনউয়ে তাঁর ঘরের দরজা খোলা বা ফোনের অন্য প্রান্তে হাজির জিলানি।
অযোধ্যা-ফৈজ়াবাদে সাংবাদিকরা গেলেই লখনউ কিংবা মালিহাবাদের বাড়ি থেকে হাজির হয়ে যেতেন জিলানি। কোট-প্যান্ট পরা আইনজীবী নন, সাদা বুশ শার্ট-আর ট্রাউজার্স পরিহিত জিলানি রিকশা থেকে ফৈজ়াবাদের হোটেলের সামনে নামতেন। মুখে হাসি। হাতে পেট মোটা ফোলিও ব্যাগ। খবর দিতেন। দিতেন নথির কপি। কেউ নিত, কেউ নিত না। কিন্তু তাতে ক্ষুণ্ণ হতেন না। বোঝাতেন, বিতর্কিত জমির অধিকার সংক্রান্ত মামলায় জিত তাঁদের হবেই। তখনও বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়নি। জিলানি বলতেন, বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি সুপ্রিম কোর্টেও যাবে। পাল্টা প্রশ্ন করতেন, আইনে বিশ্বাসের স্থান কোথায়? পরে তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি হন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব তাঁকে রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলও করেন। তবে তাঁর ধ্যানজ্ঞান ছিল বাবরি মসজিদ। এখন কী করবেন জ়াফরিয়াব জিলানি? কয়েকদিন আগে একটি চ্যানেলে বলেছিলেন, ‘‘জীবনটা পাল্টে যাবেই। অনেক মামলা হাতে জমে আছে। তাতেই মন দেব।’’