মন্দির নিয়ে মরিয়া চাল কেন্দ্রের

কোর্টে মোদী সরকার বলল, বাবরি মসজিদ যেখানে ছিল, সেই বিতর্কিত অংশের বাইরের জমি মালিকদের হাতে ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৬
Share:

গর্ভগৃহ এখনই না হোক, অন্তত মন্দিরের বাকি অংশের কাজ তো শুরু হতে পারে।

Advertisement

সন্তরা ‘আদেশ’ দিয়েছিলেন, আইন এনে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের পথ প্রশস্ত করুন নরেন্দ্র মোদী। আর মোদী বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই সরকারি পদক্ষেপ হবে। কিন্তু ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের ক্ষোভ বাড়তে দেখে আজ শীর্ষ আদালতে ছুটল কেন্দ্রীয় সরকার। কোর্টে মোদী সরকার বলল, বাবরি মসজিদ যেখানে ছিল, সেই বিতর্কিত অংশের বাইরের জমি মালিকদের হাতে ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই।

বেকারি, কৃষিসঙ্কট থেকে নজর ঘুরিয়ে ফের হিন্দুত্বের হাওয়া তোলার তাগিদ তো রয়েইছে। সকাল থেকে এটিকে মোদীর ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলে জয়ধ্বনি করছিল বিজেপি। ভাবছিল, কুম্ভে সন্তদের ‘ধর্ম সংসদ’ শুরুর মুখে এই পদক্ষেপ শান্ত করবে সাধুদের। বিশ্ব হিন্দু পরিষদও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। কিন্তু সন্ধে গড়াতেই হল উল্টো। নির্মোহী আখড়া এর বিরোধ করে বসল। বিজেপির শরিক শিবসেনাও বলল, মন্দির নির্মাণে এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে সরকার জানিয়েছে, অযোধ্যায় বিতর্কিত জমির পরিমাণ মাত্র ০.৩১৩ একর। এর বাইরে যে জমি কেন্দ্র অধিগ্রহণ করেছে, তাতে ৪২ একরের মালিকানা রামজন্মভূমি ন্যাসের। সেই জমি ন্যাসকে ও বাকি জমি মালিকদের ফেরত দিতে কেন্দ্রের আপত্তি নেই। বিতর্কিত জমির মালিকানা নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি যখনই হোক, সেই সময়ে তাদের অধিকার বজায় রাখার জন্য যাতায়াতের পথও করে দেওয়া হবে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ জানাচ্ছে, কেন্দ্রের কাছে থাকা অযোধ্যায় ৬৭.৭০৩ একর জমি পেলে এখনই তারা মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারে। পরে আসল মামলার নিষ্পত্তি হলে গর্ভগৃহের কাজ হবে।

আরও পড়ুন: লোকসভার ফলের দিনই রাজ্যে সরকার পড়বে: অমিত শাহ

কিন্তু মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড এর বিরোধ তো করছেই, নির্মোহী আখড়াও বাদ সেধেছে। আখড়ার আইনজীবী রণজিৎ লাল বর্মা বলেন, ‘‘আমরাও এর বিরোধ করব। কারণ, বিতর্কিত জমি ধরা হয় ২.৭৭ একর। এর মধ্যে আমাদেরও এক ভাগ জমি দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সেটিকে ঘিরে যে বাড়তি জমি অধিগ্রহণ হয়েছে, তা আসল মামলার স্বার্থেই। সেই মামলার রায়েই স্পষ্ট হবে, কার জন্য কী ভাবে, কতটা জমি দরকার।’’

কংগ্রেসও বলছে, এ মামলা টিকবে না। ভোটের আগে সাধু ও সঙ্ঘ পরিবারকে তুষ্ট করতেই নরেন্দ্র মোদী দেখাতে চাইছেন, তিনি মন্দিরের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সাধুদের শান্ত রাখতেই যোগী আদিত্যনাথ কুম্ভে গিয়েছেন। আজ সেখানে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে করে একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। সব মন্ত্রীকে নিয়ে কুম্ভে ডুবও দিয়েছেন।

তবে কংগ্রেস সতর্ক। দলের নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মামলা নিয়ে কংগ্রেস কোনও পদক্ষেপ করবে না। কিন্তু ভোটের মুখে ১৬ বছরের পুরনো মামলা সংশোধনের আর্জি নিয়ে শীর্ষ আদালতে গেল কেন সরকার? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ স্পষ্ট, মূল মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অধিগৃহীত বাড়তি জমির চরিত্রে বদল হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement