(বাঁ দিকে) অতুল সুভাষ এবং নিকিতা সিংহানিয়া (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
অতুল সুভাষের সন্তান কোথায় রয়েছে? বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অতুলের মৃত্যুর পর থেকে তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। অবশেষে মঙ্গলবার সেই রহস্যের মেঘ কাটল সুপ্রিম কোর্টে। অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়ার আইনজীবী আদালতে জানান, হরিয়ানার ফরিদাবাদে রয়েছে অতুল এবং নিকিতার সন্তান। সেখানে একটি আবাসিক স্কুলে পড়াশোনা করছে সে। সন্তানকে যাতে নিকিতার সঙ্গে থাকতে দেওয়া হয়, সেই আবেদনও জানান আইনজীবী।
অতুলের মৃত্যুর পর তাঁর চার বছরের সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন মৃত তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর মা অঞ্জু মোদী। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, সন্তানের মা এখনও জীবিত রয়েছেন। অন্য দিকে অতুলের সন্তানের কাছে তাঁর ঠাকুরমা কার্যত অচেনা এক জন মানুষ বলে মনে করছে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি এন কোটেশ্বর সিংহের বেঞ্চ।
সে ক্ষেত্রে নিকিতার আইনজীবী আদালতে আবেদন জানান যাতে সন্তানকে নিকিতার সঙ্গেই থাকতে দেওয়া হয়। অতুলের গ্রেফতারির পর নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা গ্রেফতার হয়েছিলেন। সদ্য কর্নাটক হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন তাঁরা। জামিনের শর্ত অনুসারে নিকিতাকে বেঙ্গালুরুতেই থাকতে হবে। আইনজীবীর বক্তব্য, এই অবস্থায় সন্তানকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যেতে চান নিকিতা। মামলার পরবর্তী শুনানিতে অতুল-নিকিতার সন্তানকে আদালতে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
গত ৯ ডিসেম্বর ভোরে বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাট থেকে অতুলের দেহ উদ্ধার হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার ভিডিয়ো ছাড়াও ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট রেখে যান অতুল, যার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী নিকিতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অতুলের ‘সুইসাইড নোট’ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের পারিবারিক আদালতে অতুল-নিকিতার বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। অতুলের পরিবারের অভিযোগ, মামলা চলাকালীন টাকা আদায় করতে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে অস্বাভাবিক যৌনতা, পণ চাওয়া, বধূ নির্যাতন এবং খুনের চেষ্টার মতো নানা গুরুতর অভিযোগে অতুলকে ফাঁসানো হয়। নিকিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন তাঁরা।
ওই মামলায় অতুলের স্ত্রী নিকিতা, শাশুড়ি নিশা এবং শ্যালক অনুরাগকে গ্রেফতার করে বেঙ্গালুরু পুলিশ। অতুলকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি হাই কোর্ট থেকে তাঁরা জামিন পেলেও অভিযোগ খারিজ হয়নি।