আতিক আহমেদ। ফাইল চিত্র।
তাঁর উপর যে হামলা হতে পারে, সেই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদ। আশঙ্কাই শেষমেশ সত্যি হল। শনিবার প্রয়াগরাজের হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আতিককে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। সেই সময় তিন দুষ্কৃতী গুলি চালায়। মাথায় পর পর গুলি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আতিক। গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান তাঁর ভাই আশরাফও। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় দু’জনেরই।
আতিকের আশঙ্কা ছিল, গুজরাত থেকে উত্তরপ্রদেশের আদালতে হাজিরা দিতে নিয়ে যাওয়ার পথে কোনও না কোনও ভাবে তাঁর মৃত্যু হতে পারে। সেই মৃত্যু কোনও সাজানো ‘দুর্ঘটনা’ থেকে হতে পারে, অথবা ‘এনকাউন্টার’-এ। শনিবার যখন আতিককে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ, তখন তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেখানে উপস্থিত কয়েক জন সাংবাদিক দাবি করেছেন, আতিক তাঁদের ধন্যবাদ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “আপনারা আছেন বলেই আমি এখনও নিরাপদে আছি।” ঘটনাচক্রে, তার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই আতিকের মাথা লক্ষ্য করে ছুটে আসে গুলি। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আতিক। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় আতিকের ভাই আশরাফের।
আতিককে খুন করার ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, সাংবাদিকের ছদ্মবেশে তিন দুষ্কৃতী খুব কাছ থেকে গুলি চালায়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।
আতিক আগেই আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন, তাঁকে খুন করা হতে পারে। গুজরাত থেকে উত্তরপ্রদেশ আনার সময় তেমন কোনও ঘটনা না ঘটলেও শনিবার তা আর ঠেকানো গেল না। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হল আতিক এবং তাঁর ভাই আশরাফকে। ঘটনায় এক সাংবাদিক এবং এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রয়াগরাজের এক পুলিশ আধিকারিক।
শনিবার ছেলের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়ে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন আতিক। কিন্তু তাঁর আইনজীবী মণীশ খন্না পিটিআইকে জানান, ১৪ এপ্রিল অম্বেডকর জয়ন্তীর ছুটি থাকার কারণে আতিকের আবেদনপত্রটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়। শনিবার ওই আবেদন মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়। তার আগেই অবশ্য আসাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। আসাদ ছিলেন আতিকের তৃতীয় পুত্র। উমেশ পাল হত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আসাদ এবং তাঁর সঙ্গী গুলাম উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে হত হয়। গত বৃহস্পতিবার আতিকের পুত্র আসাদ এবং তাঁর এক সঙ্গীকে গুলি করে পুলিশ। আতিকের কনভয়ে হামলা করার পরিকল্পনা ছিল আসাদের, এমনটাই পুলিশ সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে। মামলার কারণে আতিককে ঘনঘন গুজরাতের সাবরমতী জেল থেকে প্রয়াগরাজে, আবার প্রয়াগরাজ থেকে সাবরমতী নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।