Assembly Elections 2018

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন: কে কী বললেন?

কেউ বললেন ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে কী হতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। কোনও রাজনৈতিক দল আবার আঞ্চলিক স্তরে ভাল ফল করার পর জাতীয় পর্যায়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিল এখন থেকেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:৩৭
Share:

নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস সদর দফতরে কর্মীদের উল্লাস। ছবি: পিটিআই।

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নানান প্রতিক্রিয়ায় সরগরম হল ভারতের রাজনৈতিক মহল। কেউ বললেন ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে কী হতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। কোনও রাজনৈতিক দল আবার আঞ্চলিক স্তরে ভাল ফল করার পর জাতীয় পর্যায়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিল এখন থেকেই।

Advertisement

নজরকাড়া ফলাফলের জন্য দিনের শুরু থেকেই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন রাজস্থানে জয়ের দুই কারিগর সচিন পায়লট এবং অশোক গহলৌত। সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের মধ্যে সচিন পায়লট জানালেন, ‘‘রাজস্থানের মানুষ স্পষ্ট জনাদেশ দিয়েছেন। বিজেপির অধিকাংশ মন্ত্রীই এই নির্বাচনে হেরেছেন। তা থেকেই স্পষ্ট, সাধারণ মানুষ বিজেপিকে সব রকম ভাবে বর্জন করেছেন। সরকার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও সমমনোভাবাপন্ন সমস্ত দলকেই আমরা সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানাব। বিজেপির বিপর্যয়ের ঘণ্টা বেজে গেল। কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা ঠিক করবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সবার সঙ্গে কথা বলে তা ঘোষণা করবেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।’’

একই ইঙ্গিত পাওয়া গেল অশোক গহলৌতের কথায়। রাজস্থান জয়ের পর তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছি। কিন্তু জয়ী নির্দল প্রার্থীদেরও আমরা সরকার গঠনের শরিক হতে আহ্বান জানাব।

Advertisement

তেলঙ্গানায় প্রতিপক্ষকে সাফ করে ফের ক্ষমতায় তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি সুপ্রিমো কে চন্দ্রশেখর রাও। সকাল থেকেই ভাসলেন অভিনন্দনের বন্যায়। তিনিই যে ফের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মেয়ে এবং টিআরএস সাংসদ কে সবিতা অবশ্য দিলেন জাতীয় রাজনীতিতে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠার ইঙ্গিত। সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানালেন, ‘‘সাড়ে চার বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফসল পেলাম। আমার বাবার থেকে তেলঙ্গানাকে কেউ ভাল চেনে না। বাবাই মুখ্যমন্ত্রী হবেন কিন্তু এখন থেকে জাতীয় রাজনীতিতেও বাবাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখতে চাই।’’

বিজেপির এই বিপর্যয় নিয়ে মুখ খুলেছে এনডিএ শরিক শিবসেনাও। গত বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির সমালোচনায় মুখর তারা। এই নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্ট হওয়ার পর শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের কড়া প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই জয় কংগ্রেসের নয়। মানুষ আমাদের ওপর রাগ করে কংগ্রেসের দিকে চলে গিয়েছে। কেন এরকম হল, তা খতিয়ে দেখতে হবে আমাদের। বিজেপিরও নিজেদের ভূমিকা নিয়ে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’’

হায়দরাবাদের রাস্তায় তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: পিটিআই।

ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে বিজেপির পরাজয়ের ইঙ্গিত স্পষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টুইট করে প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘এই জয় গণতন্ত্রের। অবিচার, অত্যাচার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন দেশের মানুষ।’’ পরে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানান, ‘‘বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গেল। শুরু হয়ে গেল লোকসভা নির্বাচনের কাউন্টডাউন। এই জয় সারা দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তির জয়।’’

পাঁচ রাজ্যের এই ফলাফলে দীর্ঘদিন পর জমজমাট কংগ্রেস শিবির। উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি ইউপিএ জোট শরিক ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা। তাঁর কথায়, ‘‘‘মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টির থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। বেকারত্ব বৃদ্ধি, কৃষিতে বিপর্যয়, টাকার মূল্যে পতন। বিজেপি দেশ চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ২০১৯ এ পরিবর্তন আসছে, এই রায় থেকে তা স্পষ্ট।’’

আরও পড়ুন: টিআরএস ঝড়ে উড়ে গেল কংগ্রেস-টিডিপি জোট, দাগই কাটল না বিজেপি

রাখঢাক না করে রাহুলের নেতৃত্বের জন্যই এই ফলাফল বলে জানিয়েছেন পঞ্জাব কংগ্রেসের নেতা এবং মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। তাঁর মন্তব্য, ‘‘জাতীয় রাজনীতিতে রাহুল গাঁধীর উত্থান স্পষ্ট। লাল কেল্লায় আমাদের পতাকা উঠতে আর দেরি নেই।’’

আরও পড়ুন: উত্তরপূর্বে নিশ্চিহ্ন কংগ্রেস, মিজোরামে ক্ষমতায় ফিরল এমএনএফ, খাতা খুলল বিজেপি

(ভোটের খবর, জোটের খবর, নোটের খবর, লুটের খবর- দেশে যা ঘটছে তার সেরা বাছাই পেতে নজর রাখুন আমাদের দেশ বিভাগে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement