বিধানসভার চল্লিশটি আসনের মধ্যে ছাব্বিশটি আসন পেয়েছে এমএনএফ।
দশের গেরোয় আটকে গেল কংগ্রেসও।
টানা দশ বছর রাজ্য শাসনের পরে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)-এর হাতে হেরেছিল মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। পরের দশ বছর ক্ষমতায় থেকে ২০০৮ সালে ফের হারেন জোরামথাঙ্গা। কিন্তু প্রবল প্রতিষ্ঠান-বিরোধী মানসিকতা, বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি, বিজেপি নেতৃত্বাধীন নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা) সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ায় দশ বছর পর আজ ক্ষমতা ফের প্রাক্তন জঙ্গি নেতা তথা এমএনএফ প্রধান জোরামথাঙ্গার হাতের মুঠোয়। দু’টি আসনে হারলেন লালথানহাওলা। নিজের গড় সেরচিপ আসনে তিনি হেরেছেন ইন্দিরা গাঁধীর প্রাক্তন নিরাপত্তা-প্রধান, আইপিএস লালডুহোমার কাছেই।
ভোটে এমএনএফ-এর সঙ্গে বিজেপির আনুষ্ঠানিক সমঝোতা হয়নি। সেক্ষেত্রে বড় বাধা ছিল খ্রিস্টান-প্রধান মিজোরামের ‘চার্চ’। তবু এমএনএফ-এর পিছনে ছিল বিজেপির যাবতীয় সহায়তা। ‘নেডা’র আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজ এমএনএফ-এর জয়কে ‘নেডা’র জয় বলেই স্বীকার করে নিয়েছেন।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিধানসভার চল্লিশটি আসনের মধ্যে ছাব্বিশটি আসন পেয়েছে এমএনএফ। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নিশ্চিত জোরামথাঙ্গা। বিজেপির একমাত্র বিজয়ী সদস্য বুদ্ধধন চাকমাকে সরকারে নেওয়ার দায় তাঁর নেই। অন্য দিকে, গো বলয়ে পর্যুদস্ত বিজেপি-ও আপাতত
উত্তর-পূর্বকে ‘কংগ্রেস মুক্ত’ করে মুখ রক্ষা করল।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া হিমন্তবিশ্বকে সামনে রেখে ‘নেডা’ তৈরি করেছিলেন ২০১৬ সালে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, অন্তত আগামী লোকসভা ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল আসার আগে পর্যন্ত ‘নেডা’র শাসনই কায়েম থাকবে উত্তর-পূর্বে। কারণ, কেন্দ্রে যে দলের সরকার, সেই দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রক্ষার ব্যাপারে উত্তর-পূর্বের অধিকাংশ রাজ্যেরই প্রবণতা রয়েছে।