চন্দ্রবাবু নায়ডু
পুরনো তিক্ততা সরিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাহুল গাঁধীর বাড়িতে। লোকসভা ভোটে বিজেপি-বিরোধী মহাজোট গড়তে সব দলের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে। নিজেও দেখা করেছিলেন শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, অরবিন্দ কেজরীবাল, ফারুক আবদুল্লাদের সঙ্গে। তার পরে জোট-বার্তা নিয়ে আজ চন্দ্রবাবু নায়ডু পৌঁছে গেলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী এবং তাঁর বাবা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ় ডি দেবগৌড়ার কাছেও।
বেঙ্গালুরুতে পিতা-পুত্রের সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে চন্দ্রবাবু দাবি করেন, কেন্দ্রে বিজেপিকে হারাতে এক মঞ্চে আসছে বিরোধী দলগুলি। তেলুগু দেশম নেতা বলেন, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সিবিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হচ্ছে। আরবিআই গভর্নর ইস্তফার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। আয়কর হানার নামে বিরোধী নেতাদের হেনস্থা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। নোট বাতিলের মতো ভুল পদক্ষেপে অর্থনীতিও বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে সমস্ত বিরোধীর একজোট হওয়া উচিত। দেশকে বাঁচানোই আমাদের অগ্রাধিকার।’’
চন্দ্রবাবু জানান, জোট নিয়ে আগামিকাল ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। দেবগৌড়ার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়কার কথা মনে করিয়ে কুমারস্বামী বলেন, ‘‘১৯৯৬ ফেরত আসবে ২০১৯ সালে।’’ দেবগৌড়া বলেন, ‘‘এনডিএ-কে সরাতে জোটে আসা উচিত কংগ্রেসেরও।’’ ক্ষমতায় এলে জোটের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেই প্রশ্ন করা হলে অবশ্য প্রসঙ্গ এড়িয়ে চন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কংগ্রেস বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবগৌড়া। কংগ্রেস হল নোঙর— একটি গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী দল।’’
বিজেপি শিবিরের নেতারা চন্দ্রবাবুর এই মন্তব্য শুনে আরও এক বার বলছেন যে, বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের মতো চন্দ্রবাবুও আসলে নিজের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জমি তৈরি করতে নেমেছেন। তেলঙ্গানার বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস, সিপিআই এবং তেলঙ্গানা জন সমিতিকে নিয়ে ‘মহাজোট’ গড়ে শাসক টিআরএসের বিরুদ্ধে লড়ছে চন্দ্রবাবুর দল। এআইসিসি-র তরফে তেলঙ্গানার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আর সি খুঁটিয়া-র দাবি, আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। রাহুলের সম্মতির পরে তা প্রকাশ করা হবে। বিদায়ী সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের ভাইপো হরিশ রাও আজ খোলা চিঠিতে অভিযোগ করেন, তেলঙ্গানার বিরুদ্ধে বরাবর ষড়যন্ত্র করেছেন নায়ডু। সেচ থেকে বিদ্যুৎ— বাগড়া দিয়েছেন সবেতেই। তাই মহাজোট ক্ষমতায় এলে রাজ্যের বিপদ। কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, চন্দ্রশেখর রাওকে দিয়ে ফেডারেল ফ্রন্টের হাওয়া তুলিয়ে জোটে ফাটল ধরাতে চাইছিল বিজেপি। এ সব চেষ্টাই ব্যর্থ হবে।