(বাঁ দিকে) রিপুন বরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে অস্বস্তিতে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। আর সেই আবহেই দল ছাড়লেন অসম তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি রিপুন বরা। রবিবার সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিনেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে সভাপতি পদের সঙ্গেই দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।
সভাপতি হিসাবে নিজের ব্যর্থতার সঙ্গে অসমের জনতার মধ্যে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্য না হওয়াকেই কারণ হিসাবে তুলে ধরেছেন রিপুন। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবের সঙ্গে কলকাতা এসে অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন রিপুন। অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁকে দেওয়া হয় রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে অসমে চারটি আসনে লড়াই করে পরাস্ত হয় তৃণমূল। কার্যত সেই হারের দায় নিয়েই যে তিনি পদ থেকে সরে যাচ্ছেন, তা-ও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন রিপুন।
একসময় অসম কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন রিপুন। কংগ্রেসের প্রতীকেই অসম থেকে হয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ। রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের সন্তোষমোহন দেবের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি। এমন একজন নেতাকে হারানো অসম তৃণমূলের পক্ষে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। পদত্যাগের চিঠিতে রিপুন লিখেছেন, সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে তিনি অসমের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন করেছেন। ফলস্বরূপ, রাজ্যের ৩৫টি জেলার মধ্যে ৩১টি জেলায় তৃণমূলের সংগঠন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই আন্দোলন এবং সংগঠনের প্রভাব অসমের ভোটের রাজনীতিতে ধরা পড়েনি।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা রিপুন বরার পদত্যাগপত্র। ছবি: সংগৃহীত।
এ ক্ষেত্রে এই প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদের মত, অসমের মানুষ তৃণমূলকে গ্রহণ করেনি। তারা কেবল তৃণমূলকে পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক দল হিসাবেই দেখে এসেছে। তাই অসমের রাজনীতিতে তাঁর করা পরিশ্রমের ফসল তুলতে পারেনি তৃণমূল। তাই তিনি আর সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। সঙ্গে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও যেন তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অসমের রাজনৈতিক মহল সূত্রে খবর, রিপুন আবারও ফিরতে পারেন কংগ্রেসেই। কারণ চিঠির শেষাংশে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। সেখানে রিপুন বলেছেন, তৃণমূল ছাড়লেও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই চলবে। তাই মনে করা হচ্ছে, লোকসভা ভোটে ৯৯ আসন জয়ী তাঁর পুরোনো দল কংগ্রেসে ফিরেই রাজনীতি করতে চান রিপুন। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁকে মোবাইলে ফোন করা হলে তাঁর জবাব পাওয়া যায়নি। অসমের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা পরে প্রতিক্রিয়া জানাবেন বলে মন্তব্য করেছেন।