মন্ত্রীর সেই গাড়ি। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।
প্রচারের শেষ দিকে প্রায় সব সভা থেকে রাজ্যের মানুষকে সজাগ থাকার ডাক দিয়েছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। জনতার কাছে তাঁর আর্জি ছিল, নানা রাজ্য থেকে লোক এসে ত্রিপুরায় ঘুরে বেড়়াচ্ছে। কার কী মতলব, সংশয় আছে! প্রচারের সময় ফুরিয়ে যাওয়ার পরে বাইরের এমন কাউকে দেখে সন্দেহ হলে পুলিশের হাতে তুলে দিন। প্রচার শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জনতার হাতে ‘ধরা’ পড়়লেন অসমের এক মন্ত্রী!
ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটের প্রচার শেষ হয়েছে শুক্রবার বিকাল ৪টেয়। নিয়ম মোতাবেক, তার পরে ভোটার বা ভোট-প্রক্রিয়ার সঙ্গে কর্মসূত্রে যুক্ত ব্যক্তিরা ছাড়া সকলকেই এলাকা ছেড়ে যেতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গণ্ডাছড়়ার মগপাড়়ায় সতীরানি চাকমার বাড়়িতে এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বহিরাগত মুখ দেখে ঘেরাও করে রাখেন এলাকার মানুষ। খবর যায় পুলিশে। গণ্ডাছড়়া থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর পরিচয় অসমের শিল্পমন্ত্রী! নাম পল্লব লোচন দাস। ধলাই জেলার এসপি স্মৃতিরঞ্জন দাস জানিয়েছেন, মন্ত্রী দাবি করেন, প্রচারের সময়সীমার বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তাঁকে যেন ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। থানায় তল্লাশির পরে পুলিশ মন্ত্রীকে অসমে ফেরত পাঠায়।
মন্ত্রী যে গাড়়ি ব্যবহার করছিলেন, তাতে উনকোটি জেলার এসপি-র সই করা পাস ছিল। যদিও উনকোটির এসপি অজয়প্রতাপ সিংহ জানিয়েছেন, তিনি এমন কোনও পাসই দেননি! ভোটের দু’দিন আগে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সরব হয়েছে সিপিএম। শুধু এই একটি ঘটনাই নয়। সন্ধ্যার পর থেকে বেশ কয়েকটি জেলায় বাইরের লোক দেখে পুলিশের কাছে তাঁদের নিয়ে গিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। আটকদের মধ্যে অধিকাংশই বিজেপি-র বিস্তারক বা ভিন্ রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের কর্মী বলে খবর মিলছে।
মুখ্যমন্ত্রী মানিকবাবুর বিধানসভা কেন্দ্র ধনপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার (এআরও)মানিকলাল দাসকে এ দিনই সরিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ ছিল। তাঁর জায়গায় নতুন এআরও নিয়োগ করা হয়েছে ইউ কে চাকমাকে।