অসমের গোহপুরে চলছে অস্থায়ী বাঁধ তৈরির কাজ। ছবি: পিটিআই ।
গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত অসম। ভারী বর্ষণের কারণে সে রাজ্যের অধিকাংশ নিচু এলাকা জলমগ্ন। তার মধ্যেই আবার নতুন করে আশঙ্কার কথা শোনাল অসম সরকার। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই কুরিচু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধার থেকে টানা ৯ ঘণ্টা জল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে ভুটান সরকার। যার ফলে বিপদের মুখে পড়তে পারে অসমের অনেকগুলি জেলা। ভেসে যেতে পারে গ্রামের পর গ্রাম।
বৃহস্পতিবার রাতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা টুইটারে লেখেন, ‘‘ভুটান সরকার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কুরিচু বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়া হবে৷ আমরা জেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছি। বেকি ও মানস নদীতে জল বাড়তে শুরু করলেই সাম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে সাধারণ মানুষকে সহায়তা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার ভুটান সরকারের তরফে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুরিচু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ‘ড্রুক গ্রিন পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (ডিজিপিসি)’ বৃহস্পতিবার রাত থেকে জলাধারে জমে থাকা জল নিয়ন্ত্রিত ভাবে ছেড়ে দেবে। ৯ ঘণ্টা ধরে এই জল ছাড়ার প্রক্রিয়া চলবে। এই নিয়ে অসম সরকারকেও সতর্ক করে ভুটান সরকার।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতে ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অসমে। অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে সে রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি হল বিশ্বনাথ, বোঙ্গাইগাঁও, চিরাং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, কোকরাঝাড়, মাজুলি, নলবাড়ি এবং তিনসুকিয়া।
অসমের রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএসডিএমএ) জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যেই মোট ১৭৯টি গ্রাম জলের নীচে ডুবে গিয়েছে। ২২১১.৯৯ হেক্টর চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি জেলা হল ধেমাজি এবং চিরাং। ধেমাজিতে ১৭,৬০৪ জন এবং চিরাংয়ে বন্যার কারণে ১৪,৩২৮ জন ক্ষতির মুখে পড়েছে। বেকি, দিসাং এবং ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলেও এএসডিএমএ জানিয়েছে।