ফাইল চিত্র।
এনআরসি নিয়ে করিমগঞ্জ ফরেনার্স ট্রাইবুনালের সাম্প্রতিক এক রায় ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ওই ট্রাইবুনাল রায়ে বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে ২০১৯-র ৩১ অগস্ট প্রকাশিত এনআরসি-ই চূড়ান্ত। তাতে যাঁদের নাম উঠেছে, তাঁরা অসম-সহ ভারতের বৈধ নাগরিক। কিন্তু অসম সরকার তা মেনে নিতে নারাজ। পর দিনই স্বরাষ্ট্র দফতর রায়ের কপি সংগ্রহের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। সোমবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে এ নিয়ে বলেন, “ফরেনার্স ট্রাইবুনালের মাননীয় সদস্য বোধ হয় সুপ্রিম কোর্টের এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা পড়ে দেখেননি। পড়লে এমন অভিমত প্রকাশ করতেন না।”
এনআরসি সম্পর্কে সরকারের বর্তমান অবস্থান কী? এই প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এই বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে। কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, তালিকা পুনঃপরীক্ষার দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারের মতামতকেই কেন্দ্র সমর্থন করবে।” এনআরসি ঝুলে থাকায় বহু বৈধ ভারতীয় নাগরিক আধার কার্ড পাচ্ছেন না। সে জন্য তাঁরা নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছেন। অথচ প্রথম তালিকায় নাম না উঠলেও পরবর্তী সময়ে তাঁদের অধিকাংশ উপযুক্ত নথিপত্র দেখিয়ে এনআরসি-তে নাম তুলতে সক্ষম হন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টকে বুঝিয়ে বলা হবে। এনআরসিতে নাম ওঠা নাগরিকদের বায়োমেট্রিক-লক খুলে দিতে অনুমতি চাওয়া হবে। তিনি এ জন্য আর কিছু দিন ধৈর্য ধরতে বলেন।
করিমগঞ্জ ফরেনার্স ট্রাইবুনাল এনআরসি-কে নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ হিসেবে গণ্য করায় আইনজীবী ও সমাজকর্মীদের অনেকেই অবশ্য ওই রায়কে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তাঁদের মতে, করিমগঞ্জ ফরেনার্স ট্রাইবুনালের সদস্য-বিচারক শিশিরকুমার দে-র এই রায় বহু জটিলতার অবসান ঘটাবে। অনেককে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে সাহায্য করবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী এখন রায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলার পরে মনে করা হচ্ছে, অসম পুলিশ বনাম বিক্রম সিংহের মামলার রায় পুনর্বিবেচনার জন্য হাই কোর্টে আপিল করা হবে৷