রামবিলাস পাসোয়ান। —ফাইল চিত্র।
নাম না করে রাবড়ী দেবীকে ‘অঙ্গুঠা ছাপ মুখ্যমন্ত্রী’ বলেছেন। এরই প্রতিবাদে বাবা রামবিলাস পাসোয়ানের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসে পড়লেন মেয়ে!
বিহার রাজনীতির লোকজনের কাছে অবশ্য এটা বেশ স্পষ্ট, প্রতিবাদটা গৌণ। আসল লক্ষ্য লোকসভার টিকিট। আর সেই লক্ষ্য পূরণেই ধর্নায় বসেছেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রীর প্রথম পক্ষের মেয়ে আশা পাসোয়ান। রামবিলাসের কেন্দ্র হাজিপুরে লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়াতে চাইছেন তিনি। কেননা, এ বার লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)-র নেতা রামবিলাস। ওই কেন্দ্রে তাঁর ছেলে চিরাগ বা ভাই রামচন্দ্র পাসোয়ান দলের টিকিটে দাঁড় করানোর কথা চলেছে। তাতেই বাদ সেধেছেন আশা। দল টিকিট দেবে না আঁচ করে আগে থেকেই আরজেডির শরণাপন্ন হয়েছেন আশা। আর রামবিলাসকে হারাতে তাঁর মেয়েকে হাতিয়ার করছে লালুপ্রসাদের দলও।
সম্প্রতি আর্থিক ভাবে অনগ্রসর মানুষদের জন্য কেন্দ্রের দেওয়া ১০ শতাংশ সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করছিলেন রামবিলাস। সে সময়ে নাম না করে রাবড়িদেবীকে টিপছাপ তথা নিরক্ষর মুখ্যমন্ত্রী বলে কটাক্ষ করেছেন বলে অভিযোগ আশার। তাঁর যুক্তি, ‘‘নাম না করলেও বাবা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবীকে উদ্দেশ্য করেই মন্তব্য করছেন।’’ লালুপ্রসাদ ১৯৯৭ সালে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছিলেন রাবড়ী দেবী। প্রায় আট বছর তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার সামলেছেন। তাঁকে আক্রমণ করায় রামবিলাসের বিরুদ্ধে মেয়েকে মাঠে নামিয়েছে আরজেডি। আজ আরজেডির মহিলা সংগঠনের কর্মীরাও ধর্নায় বসেন আশার সঙ্গে।
আশার মা তথা প্রথম পক্ষের স্ত্রী রাজকুমারী দেবীর সঙ্গে রামবিলাসের বিচ্ছেদ হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে চিরাগের হাতেই দলের দায়িত্বভার দিতে মনস্থির করেছেন রামবিলাস। তা নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগও তুলেছেন তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলেমেয়েরা। চিরাগকে দলের উত্তরাধিকারী করার প্রতিবাদে গত বছরই এলজেপি ছেড়়ে প্রতিপক্ষ আরজেডি শিবিরে নাম লিখিয়েছেন আশা। তাঁর দাবি, ‘‘বাবা রাবড়ি দেবীর প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন। আমার মা নিরক্ষর বলেই তাঁর সঙ্গে থাকেন না। মন্তব্যের জন্য বাবাকে ক্ষমা চাইতেই হবে।’’ বাবার বিরুদ্ধে হাজিপুরে প্রচার করবেন বলেও জানান তিনি। দিদির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চিরাগ বলেছেন, ‘‘পরিবারের বিষয়ে বাইরে কিছু বলতে চাই না।’’