দিল্লির মন্ত্রী অতিশী মারলেনা। — ফাইল চিত্র।
জলসঙ্কট সমাধানের দাবি জানিয়ে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসলেন দিল্লির মন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) নেত্রী অতিশী মারলেনা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আপের একাধিক নেতা-নেত্রী। অতিশীর এই সিদ্ধান্তকে ‘স্বাগত’ জানালেন জেলবন্দি অরবিন্দ কেজরীওয়াল। জেল থেকে দেওয়া এক বার্তায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তৃষ্ণার্তকে জল দেওয়া আমাদের সংস্কৃতি। এই নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’’
তীব্র গরমের কারণে দিল্লির অনেক জায়গাতেই পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। জল নিয়ে হাহাকারের ছবিও দেখা গিয়েছে রাজধানীর নানা জায়গায়। চাণক্যপুরীর সঞ্জয় ক্যাম্প এবং গীতা কলোনি এলাকায় জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে। এক বালতি জল ভরতে রোদের মধ্যে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে মানুষকে।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী রাজ্যের থেকে বাড়তি জল চেয়েছিল দিল্লি সরকার। মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। তার মধ্যেই অতিশী দিল্লির জলসঙ্কট মেটানোর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি জানান, যদি ২১ জুনের মধ্যে দিল্লির জলসঙ্কট না মেটে তবে তিনি অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসবেন।
সেই মতো শুক্রবার দক্ষিণ দিল্লির ভোগালে ‘জল সত্যাগ্রহ’ কর্মসূচি শুরু করলেন অতিশী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন কেজরীওয়াল-পত্নী সুনীতা, আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ, দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ-সহ আপ নেতৃত্ব। এই কর্মসূচি নেওয়ার জন্য অতিশীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কেজরী। জেল থেকে পাঠানো বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘তীব্র তাপপ্রবাহের সময় মানুষ কী ভাবে জলসঙ্কটে ভুগেছেন, তা টিভিতে দেখে আমি খুবই মর্মাহত। তৃষ্ণার্তকে জল দেওয়া আমাদের সংস্কৃতি। দিল্লি প্রতিবেশী রাজ্যগুলির থেকে জল পায়। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা প্রতিবেশী রাজ্যগুলির থেকে সাহায্য আশা করেছিলাম। কিন্তু হরিয়ানা সরকার দিল্লিতে পাঠানো জলের ভাগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। যদিও দুই রাজ্যে ভিন্ন দলের সরকার রয়েছে, তবুও এই সঙ্কটের সময় জল নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।’’
হরিয়ানার জল সরবরাহ নিয়ে অতিশীর অভিযোগ, দিল্লি সাধারণত প্রতিদিন ১০০ কোটি ৫০ লক্ষ গ্যালন জল পায়। হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে জল আসে ৬১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে হরিয়ানা সরকার সেই পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। তারা এখন ৫১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন জল ছাড়ছে। যার ফলে প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষ জলসঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছেন।