দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।—ছবি পিটিআই।
জেএনইউ ক্যাম্পাসে থেকেও শিক্ষক-পড়ুয়াদের উপর হামলা আটকায়নি দিল্লি পুলিশ। দুষ্কৃতীদের ভিডিয়ো থাকা সত্ত্বেও ঘটনার ৪ দিন পরও কাউকে গ্রেফতার করেনি। অমিত শাহের অধীনে থাকা সেই পুলিশের সমর্থনে আজ মুখ খুললেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। জেএনইউ কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লি পুলিশের আর কী দোষ! ওরা যা নির্দেশ পেয়েছে তাই করেছে। না হলে তো সাসপেন্ড হতে হবে।’’ যা শুনে বিরোধীরা বলছে, ভোটের মরসুমে কাউকেই চটাতে চাইছেন না কেজরীবাল।
দিল্লিতে ভোটের বাজনা বেজে গিয়েছে। কংগ্রেস থেকে শুরু করে অধিকাংশ বিরোধী দল যখন জেএনইউ থেকে জামিয়া কাণ্ডে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব, তখন আজ ভিন্ন অবস্থান নেন কেজরীবাল। সমালোচনার পরিবর্তে উল্টে পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লি পুলিশ কী করতে পারে! উপরতলা থেকে নির্দেশ আসে যে তোমাদের হিংসা রুখতে হবে না, আইনশৃঙ্খলা ঠিক করার দরকার নেই, তা হলে বেচারা পুলিশ কী করবে। আর নির্দেশ না মানলে সাসপেন্ড হতে হবে।’’
অনেকেরই মতে, দীর্ঘ দিন ধরেই দিল্লি পুলিশের ক্ষমতা নিজের হাতে নেওয়ার জন্য সরব কেজরীবাল। এ বারও তাঁর প্রচারের মূল দাবি, দিল্লিকে পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা দেওয়া। তা ছাড়া, আসন্ন রাজধানীর ভোটে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে দিল্লি পুলিশ। তাই প্রচারের শুরুতেই দিল্লি পুলিশকে ‘আমি তোমাদেরই লোক’ ধাঁচের ইতিবাচক বার্তা দিয়ে রাখলেন কেজরীবাল। দিল্লি পুলিশের সমর্থন পেতেই কেজরীবাল ওই বার্তা দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কেজরীবাল পাশে দাঁড়ালে কী হবে, জেএনইউ কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ প্রশাসন। যদিও গতকাল দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, তারা বেশ কিছু মুখোশধারীকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন। কিন্তু মুখোশের আড়ালে কারা ছিল, তার আজও কোন হদিশ দিতে পারেনি পুলিশ। এ দিকে জেএনইউ কাণ্ড কেন ঘটল, তার কারণ জানতে স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা ও দিল্লির পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়ককে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটি। আগামী ১৩ই জানুয়ারি কমিটির বৈঠক। সূত্রের খবর, দিল্লির আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ওই বৈঠক হলেও, মূলত গত রবিবার পুলিশের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও জেএনইউ ক্যাম্পাসে কেন ভাঙচুর-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল, সে বিষয়ে জবাবদিহি চাওয়া হবে ওই দুই শীর্ষ আমলার কাছে। আলোচনা হওয়ার কথা জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দিল্লি পুলিশের লাঠি চালানো নিয়েও।