দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি পিটিআই।
চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘গতকাল সুপ্রিম কোর্টে যা কিছু ঘটেছে, তা দেখে মনে হয়েছিল যেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।’’ কেজরীওয়াল আরও যোগ করেন, ‘‘প্রধান বিচারপতির মধ্যে ভগবান ছিলেন।’’
মঙ্গলবার চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে ‘কারচুপি’তে অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহার বাতিল করা আটটি ভোট বৈধ বলে জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত মেয়র নির্বাচনের পুনর্গণনা করারও নির্দেশ দেয়। পুনর্গণনার সময় বাতিল করা আটটি ব্যালট পেপারকেও গোনা হয়। তার পরই আপের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট।
অনেকেই সুপ্রিম কোর্টে চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচন মামলায় প্রধান বিচারপতির এজলাসে যা ঘটেছে তা ‘বেনজির’ বলে মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার রায়ের পরই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কঠিন সময়ে গণতন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানাই।’’ তার পরই কেজরীওয়াল বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘‘যে দল জয়ী হয় না, তারাই চুরি করে।’’
বুধবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আদালতকে মন্দির হিসাবে বিবেচনা করে থাকি। ন্যায়বিচার করা ঈশ্বরের কাজ। এই কারণেই এক জন বিচারপতি যখন রায় ঘোষণা করেন, তখন সেটিকে একক ভাবে ঈশ্বরের কাজ বলেই মনে করা হয়।’’
কেজরী আরও বলেন, ‘‘ভগবান বিজেপিকে উন্মোচন করেছেন। প্রমাণ হয়েছে যে দল জিততে পারে না তারাই চুরি করে। গোটা দেশ ভিডিয়োতে দেখেছে কী ভাবে একটি দল নির্বাচনে চুরি করেছে।’’
গত ৩০ জানুয়ারি মেয়র নির্বাচন ছিল চণ্ডীগড়ে। বিজেপিকে রুখতে ওই নির্বাচনে যৌথ ভাবে লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস এবং আপ। পুরপ্রতিনিধিদের ভোটের হিসাবে প্রথমে এগিয়েও গিয়েছিলেন আপ-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী কুলদীপ সিংহ। মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোট পায় ২০টি। অন্য দিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে জোটপ্রার্থী কুলদীপ সিংহের পাওয়া আটটি ভোট বাতিল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা।
৩৫ সদস্যের চণ্ডীগড় পুরনিগমে বিজেপির ১৪ জন কাউন্সিলর ছিলেন। অন্য দিকে আপ এবং কংগ্রেসের কাউন্সিলরের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৩ এবং ৭। এই নির্বাচনে জোট বেঁধে লড়তে নেমেছিল আপ এবং কংগ্রেস। গত ৩০ জানুয়ারি মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোটপ্রার্থী কুলদীপ সিংহ পান ২০টি। অন্য দিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে জোটপ্রার্থীর পাওয়া আটটি ভোট বাতিল করা হয়। ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘জিতেও’ হারতে হয় জোটকে।
তার পরই ভিডিয়ো প্রকাশ করে আপের তরফে দাবি করা হয়, ব্যালট পেপারে কাটাকুটি করে গণনায় কারচুপি করেছেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল। সোমবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, মঙ্গলবারই ভোটের কাজে ব্যবহৃত সমস্ত ব্যালট পেপার আদালতে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালতে পেশ করতে হবে ভোটগণনার সময়ে তোলা ভিডিয়ো ফুটেজও। সেই মতোই সেগুলি আদালতে জমা দেওয়া হয়।