দু’টি বিষয়ে হেস্তনেস্ত করতে কেজরী ও তাঁর তিন মন্ত্রী মনীশ সিসৌদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন ও গোপাল রাই উপরাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। ছবি: পিটিআই।
বেজায় মুশকিলে পড়েছেন দিল্লির উপরাজ্যপাল অনিল বৈজল। রাজ নিবাসের ভিজিটার্স রুমটিই বেহাত হয়ে গিয়েছে তাঁর। দখলদারেরা হেঁজিপেঁজি কেউ নন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ও তাঁর মন্ত্রীসভার তিন সঙ্গী। আপ শিবিরের অভিযোগ, কেন্দ্রের নির্দেশেই দিল্লি সরকারের কাজের বিরোধিতা করে রাজনীতি করছেন উপরাজ্যপাল। উপরাজ্যপালের নির্দেশে কাজ করছেন না আমলারা। ফলে ক্ষতি হচ্ছে দিল্লিবাসীর। কেজরীবালের স্পষ্ট কথা, উপরাজ্যপাল দাবি না মানা পর্যন্ত রাজ নিবাস থেকে তাঁরা নড়ছেন না।
বিতর্কের সূত্রপাত চার মাসে আগে। মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালের বাড়িতে একটি বৈঠকে যোগ দিতে যান দিল্লির মুখ্যসচিব অংশু প্রকাশ। অভিযোগ সেখানে একাধিক আপ বিধায়ক তাঁকে মারধর করেন। গ্রেফতারও হন দু’জন। কিন্তু শীর্ষ আমলার বিরুদ্ধে নিগ্রহের প্রতিবাদে ধর্মঘট শুরু করেন দিল্লির আমলারা। জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না।
আপ শিবিরের দাবি, সেই থেকে আমলাদের অসহযোগিতা চালু রয়েছে। আমলাদের খেপিয়ে তোলার পিছনে রয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। যাদের পিছন থেকে উস্কানি দিচ্ছেন উপরাজ্যপাল। কেজরীবালের কথায়, ‘‘এর ফলে সরকারের বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প আটকে গিয়েছে। তাই ধর্নায় বসা ছাড়া রাস্তা ছিল না।’’ আপ শিবিরের মতে, ওই পরিকল্পনাটি তাদের তুরুপের তাস। সফল রূপায়ণ হলে লোকসভায় দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে অন্তত পাঁচটিতে বিজেপিকে হারানো সম্ভব। আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজের কথায়, ‘‘তাই বিজেপি আমাদের পরিকল্পনা রুখতে চাইছে। ফাইল আটকে রেখেছেন উপরাজ্যপাল।’’ দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারির পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘এ সবই কাজ না করার জন্য কেজরীবালদের নতুন বাহানা।’’
আমলাদের কাজে ফেরানো ও ফাইলে বৈজলের মঞ্জুরি— দু’টি বিষয়ে হেস্তনেস্ত করতে গত কাল কেজরী ও তাঁর তিন মন্ত্রী মনীশ সিসৌদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন ও গোপাল রাই উপরাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। বৈজল জানিয়ে দেন, আমলারা ধর্মঘট করছেন বলে তাঁর জানা নেই। ফাইলের ব্যাপারে জানান, ওই ফাইল তাঁর কাছে আসেনি। জবাবে অসন্তুষ্ট কেজরীরা রাজ নিবাসের ভিজিটর্স রুমে ধর্নায় বসেন। অনশন শুরু করেন মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। ধর্নায় বসতেই দুর্গের চেহারা নেয় গোটা রাজ নিবাস চত্বর। এলাকা সিল করে দেয় পুলিশ। আজ বাধ্য হয়ে কেজরীবালের বাড়ির সামনেই বৈজলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান দলীয় সমর্থকেরা। কেন্দ্রবিরোধী আন্দোলন তীব্র করতে আগামিকাল রাজ নিবাস অভিযানের ডাক দিয়েছেন আপ নেতৃত্ব।