সংসদ চত্বরে সেরিং নামগিয়াল। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীরকে এখনও তাঁদের পারিবারিক সম্পত্তি বলে মনে করেন আবদুল্লা ও মুফতিরা। আজ ৩৭০ অনুচ্ছেদ লোপ নিয়ে লোকসভার বিতর্কে এই মন্তব্য করলেন লাদাখের বিজেপি সাংসদ সেরিং নামগিয়াল। কিছু ক্ষণের মধ্যেই তরুণ সাংসদের বক্তৃতার প্রশংসা করে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সাংসদের কথায়, ‘‘কাল থেকে অনেকেই দেখছি সাম্যের কথা বলছে। তাদের দাবি, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হলে কাশ্মীরিরা বঞ্চিত হবেন। তাঁদের কাছে আমার প্রশ্ন, এর আগে যখন কাশ্মীরের জন্য অনুদান এসেছে, তার ছিটেফোঁটাও লাদাখ পায়নি কেন? তখন তো কই কেউ সাম্যের কথা বলেনি!’’ সেরিংয়ের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা পাওয়ার আশা নিয়েই ভোট দিয়েছিলেন লাদাখের মানুষ। তিনি বলেন, ‘‘তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যখন লাদাখে এসেছিলেন, তাঁকেও সাধারণ লাদাখবাসী কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্যই অনুরোধ করেছিলেন।’’
৩৭০ নিয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতার জন্য কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের সমালোচনা করে সেরিং বলেন, ‘‘গত কাল রাজ্যসভায় ‘লাদাখের কী হবে, লাদাখের কী হবে’— বলে গলা ফাটাচ্ছিলেন গুলাম নবি আজাদ। ২০০৮ সালে তিনি যখন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, রাজ্যে আটটি নতুন জেলা করেন তিনি।
চারটি কাশ্মীরে, চারটি জম্মুতে। তখন তো লাদাখের বঞ্চনার কথা কেন মনে হয়নি তাঁর!’’
কংগ্রেস যত দিন জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষমতায় ছিল, লাদাখে একটাও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেনি বলে অভিযোগ করেন সেরিং। জানান, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে লাদাখে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়। তা ছাড়া,কাশ্মীরি ও ডোগরিকে তালিকাভুক্ত ভাষার মর্যাদা দেওয়া হলেও লাদাখের মানুষের ভাষাকে কোনও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন সেরিং। কাশ্মীরের দুই প্রভাবশালী পরিবার— মুফতি এবং আবদুল্লাদের সমালোচনা করে সেরিং বলেন, ‘‘ওই দু’টি পরিবার তো কাশ্মীরকে নিজেদের সম্পত্তি ভাবে!’’
তরুণ সাংসদের বাগ্মিতার প্রশংসা করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। আর প্রধানমন্ত্রী সেরিংয়ের বক্তৃতার ভিডিয়ো পোস্ট করে টুইট করেছেন— ‘‘লাদাখের ভাইবোনেরা কী চাইছেন, তা সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে সাংসদের বক্তৃতায়। অবশ্যই শুনুন।’’
লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাস্তবের ‘র্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুক-ও। মঙ্গলবার তিনি টুইট করে বলেন, ‘‘ঠিক ত্রিশ বছর আগে, ১৯৮৯ সালের অগস্ট মাসে, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন লাদাখি নেতারা। যাঁরা এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করেছেন, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ।’’