ছবি: সংগৃহীত।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরানো না হওয়া পর্যন্ত উপত্যকায় নির্বাচন হলেও তাতে তিনি অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানালেন জম্মু ও কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) নেত্রী মেহবুবা মুফতি। ফলে পিডিপি ভোটে জিতলেও মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি।
মেহবুবা মনে করেন, জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনের আগে উপত্যকার মানুষদের আস্থা ফেরানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। শুক্রবার কেন্দ্রকে এমনটাই ‘পরামর্শ’ দিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, উপত্যকায় বিধানসভা নির্বাচন অপেক্ষা করতে পারে। তবে ভোটের আগে কাশ্মীরিদের ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া আস্থা অর্জন করাই নরেন্দ্র মোদী সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
শুক্রবার একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে মেহবুবার দাবি, “উপত্যকায় নির্বাচনের আগে জনমানসে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের। যে আস্থায় ধাক্কা লেগে পুরোপুরি ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। মানুষজন হতাশাগ্রস্ত… আগে তাঁদের কাছে পৌঁছনো জরুরি। নির্বাচন তো অপেক্ষা করতেই পারে।”
২০১৯ সালের ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করে তাকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করেছে মোদী সরকার। সে সময় থেকেই ওই মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে সরব হয়েছেন মেহবুবা-সহ উপত্যকার রাজনীতিকদের একাংশ। সে দাবিতে এখনও অনড় মেহবুবা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তাঁর সঙ্গে বৈঠকে শামিল হওয়া নিয়েও যুক্তি দিয়েছেন। ওই বৈঠকে মেহবুবার পাশাপাশি উপত্যকার ৮টি দলের ১৪ জন রাজনীতিক উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার মেহবুবা বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, উপত্যকার আস্থা অর্জনে তা সহায়ক হবে। হয়তো কিছু মানুষকে তা স্বস্তিও দেবে। সে কারণেই ওই বৈঠকে হাজির হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল।” ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল যে কেবল তাঁদের মুখের কথা নয়, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন মেহবুবা। তিনি বলেন, “রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমি মুখ্যমন্ত্রী হব না। কারণ, মানুষের কাছে এই বার্তাই দিতে চাই যে এটা কেবল স্লোগানমাত্র নয়।”
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উপত্যকার রাজনীতিকদের কেন্দ্রীয় সরকার আশ্বাস দিয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনের পর ‘যথাসময়ে’ বিশেষ মর্যাদা ফিরে পেতে পারে জম্মু ও কাশ্মীর। তবে তার আগে বিধানসভা ভোটের আসন পুনর্বিন্যাসে জোর দিয়েছে কেন্দ্র, যাতে উপত্যকায় নির্বাচন করানো যায়।
কেন্দ্রের দাবি ছিল, গত দু’বছরে উপত্যকায় জঙ্গিদমনে সাফল্য এসেছে। তবে মেহবুবার মতে, “জঙ্গিনিধনকে সুরক্ষা বাহিনীর সাফল্য বলে ধরা যেতে পারে। তা কখনই একটি সরকারের সাফল্য হয় না। যুবসমাজের প্রতিনিধিরা কেন হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছেন, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের সে সব কমবয়সিদের কাছে পৌঁছতে হবে… আমাদের তা বন্ধ করতে হবে।”