গ্রেফতার চন্দ্রবাবু নায়ডু। —ফাইল চিত্র।
সন্ধে গড়িয়ে রাত। অমরাবতীর সিট অফিসে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুকে। অন্য দিকে চন্দ্রবাবুকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন টিডিপি সমর্থকেরা। এই গ্রেফতারিকে 'অবৈধ' বলে দাবি করে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছে চন্দ্রবাবুর দল। অশান্তি এড়াতে টিডিপির কয়েক জন শীর্ষ নেতাকে বাড়িতেই আটক করে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে তেলঙ্গানা-অন্ধ্রপ্রদেশ সীমানায়।
টিডিপির তরফে বলা হচ্ছে, ৪৫ বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা চন্দ্রবাবুকে 'অগণতান্ত্রিক ভাবে' ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের শাসকদল ওয়াইএসআর কংগ্রেস। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির দলের তরফে বলা হচ্ছে, চন্দ্রবাবুর রাজনীতিকে অহেতুক 'রাজনীতির মোড়ক' দেওয়া হচ্ছে। চন্দ্রবাবুর শাসনকালে হওয়া এই দুর্নীতির তদন্তে কেন টিডিপি সরকার সক্রিয় হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছে তারা।
সিআইডি সূত্রে খবর, যে 'স্কিল ডেভেলপমেন্ট' মামলায় চন্দ্রবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে অন্তত ২০টি প্রশ্ন করা হলেও, তার একটিরও সদুত্তর দিতে পারেননি প্রবীণ এই রাজনীতিক। ৩৭১ কোটি টাকার দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার প্রমাণ হিসাবে বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও নাকি চন্দ্রবাবুকে দেখিয়েছেন তদন্তকারীরা। এই মামলার প্রাথমিক এফআইআরে চন্দ্রবাবুর নাম ছিল না, এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। সিআইডির তরফে জানানো হয়, তদন্তপ্রক্রিয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ এবং সিআইডির অভিযোগ, চন্দ্রবাবু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সে রাজ্যের সরকারি সংস্থা ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’-এর প্রায় ৩৭১ কোটি টাকার তহবিল নয়ছয় হয়েছে। চন্দ্রবাবুর পাশাপাশি, এই মামলায় তাঁর ছেলে তথা টিডিপি নেতা নারা লোকেশকেও শনিবার সকালে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা টিডিপি বিধায়ক গন্ত শ্রীনিবাস রাও এবং তাঁর ছেলে রবিজেতা। টিডিপি নেতৃত্বের অভিযোগ, অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা ওয়াইএসআর কংগ্রেস প্রধান জগন্মোহনের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই এই পদক্ষেপ করেছেন।