মাত্র পাঁচ মাস আগেই কাজে যোগ দিয়েছিলেন উমের।
বছর বাইশ বয়স। মাত্র পাঁচ মাস আগেই রাজস্থান রাইফেসল-এ সেনা চিকিৎসক পদে যোগ দিয়েছিলেন উমর ফায়াজ পারি। আগামী মাসেই ছিল জন্মদিন। বুধবার সকালে মাথায় ও পেটে দু’টি গুলি-সহ দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ান থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার করল সেনা।
ছুটিতে ছিলেন উমর। গতকাল উমরের এক আত্মীয়ের বিয়ে ছিল সোপিয়ানে। কুলগামের বাড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে পারিবারিক এই বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি। সকাল ১০টা নাগাদ সেই বিয়েবাড়িতেই হানা দেয় সেনার পোশাকধারী অজ্ঞাত পরিচয় চার জঙ্গি। জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তার পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি উমরের। আজ মিলল তাঁর গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ।
পুণের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি(এনডিএ) এবং দেহরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ট্রেনিং শেষ করে গত ডিসেম্বরেই সেনায় যোগ দিয়েছিলেন উমর। ‘‘এই ক’দিনেই সকলের মন জয় করেছিলেন। জীবনীশক্তিতে যেন টগবগ করে ফুটত’’— এমনটাই জানিয়েছেন এক সেনাকর্তা।
শুধু ভাল ব্যবহারই নয়, খেলাধূলাতেও তুখোড় ছিলেন উমর। এনডিএ-র হকি টিমের নিয়মিত সদস্য ছিলেন। ভলিবলেও ছিলেন পারদর্শী।
আরও পড়ুন: বিয়েবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কাশ্মীরে খুন সেনা অফিসার
সীমান্তবর্তী আখনউর এলাকায় পোস্টিং ছিল উমরের। দিন কয়েকের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন। কথা ছিল আগামী সেপ্টেম্বরে ইয়ং অফিসারদের একটি কোর্স করতে যাবেন উমর। কিন্তু যাওয়া হল না।
সেনা সূত্রে খবর, সোপিয়ানের বিয়েবাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হার্মান চক এলাকায়। বুধবার সেখান থেকেই মেলে উমরের গুলিবিদ্ধ দেহ। এর পর থেকেই অজ্ঞাত পরিচয় ওই চার ব্যক্তির খোঁজে অভিযানে নেমেছে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। তবে সেনার অভিযোগ, উমরের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা তাঁর পরিবারের তরফে সেনা কর্তৃপক্ষকে জানান হয়নি। ফলে তল্লাশি অভিযান শুরুও করা যায়নি। ‘‘আক্ষেপ রয়ে গেল’’— বললেন উমরের এক সহকর্মী।
সেনা তরফে জানান হয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে উমরের দেহ। কুলগামে তাঁর গ্রামেই পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় উমরের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন মৃতদেহ গ্রামে ঢোকার পর। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। তবে হাতের বাইরে যাওয়ার আগেই পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
(ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে)