নিহত ঔরঙ্গজেবের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত। সোমবার জম্মুর পুঞ্চে। পিটিআই
ইদের কয়েক মাস আগে থেকেই বছর পনেরোর কিশোর দিন গুনছিল দাদার ফেরার অপেক্ষায়। ভেবেছিল, তার জন্য প্রচুর উপহার, নতুন পোশাক, ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে আসবে দাদা। শেষ পর্যন্ত দাদা ফিরলেও আনন্দ বদলে গিয়েছে শোকে। সেনা জওয়ান ঔরঙ্গজেবের কফিনবন্দি দেহ ফিরল বাড়িতে। দাদার দেহ জড়িয়ে ভাইয়ের আর্তি, উপহার নয়, দাদা ফিরে আসুক।
দাদা ঔরঙ্গজেব জম্মু ও কাশ্মীরের পদাতিক সেনার সদস্য। গত সপ্তাহেই সন্ত্রাসবাদীরা অপহরণ করেছিল তাঁকে। অবশেষে তাঁর গুলিতে ঝাঁঝরা মৃতদেহ মেলে। আজ কাশ্মীরে সেনাকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত। পরে পুঞ্চে নিহত ঔরঙ্গজেবের পরিজনেদের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। পরিবারের দাবি, কেন্দ্র এবং জম্মু ও কাশ্মীর সরকার সন্ত্রাসকে নির্মূল করুক রাজ্য থেকে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিহত জওয়ান
ঔরঙ্গজেবের বাবা মহম্মদ হানিফের আর্জি, ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া হোক। সরকার পদক্ষেপ করতে না পারলে নিজেরাই ঝাঁপিয়ে পড়বেন প্রতিশোধে। ছেলের মতো হানিফও ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর পদাতিক বাহিনীর সদস্য। দাদার মৃত্যুর পরেও পারিবারিক পরম্পরা বজায় রাখতে চায় বছর পনেরোর আসিম।
ঔরঙ্গজেব শোপিয়ানে ৪৪ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ক্যাম্পে ছিলেন। সেখান থেকে রাজৌরিতে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িতে চেপেছিলেন তিনি। গাড়ি কলমপোড়ার কাছে পৌঁছতেই রাস্তা আটকে ঔরঙ্গজেবকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। সন্দেহ, ঘটনার পিছনে রয়েছে হিজবুল মুজাহিদিন। এক সময় ঔরঙ্গজেব মেজর রোহিত শুক্লর দলের সদস্য ছিলেন। যারা হিজবুল মুজাহিদিনের সদস্য সামির টাইগারের উপরে গুলি চালিয়েছিল।
ভাই আসিম জানায়, গাড়িতে ফেরার সময়ে দাদার সঙ্গে কথা হয়েছিল তার। আচমকাই এক অচেনা কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিল সে। ভেবেছিল,
কোনও চেকপোস্টে হয়তো আটকে পড়েছে দাদা। কয়েক ঘণ্টা পরেই কালামপোরার দশ কিলোমিটার দূরে মেলে গুলিতে ঝাঁঝরা ঔরঙ্গজেবের দেহ। মাথায় ও ঘাড়ে ছিল গুলির চিহ্ন। কবর দেওয়ার আগে তাঁকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হয়। শোক জানাতে হাজির হয় প্রচুর মানুষ।
এ দিকে বান্দিপুরে এক অভিযানে চার জঙ্গিকে নিকেশ করল সেনাবাহিনী।