ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ, রাজ্যের পাটচাষি ও চটকল কর্মীদের দুরবস্থা নিয়ে বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও তিনি চোখ বন্ধ করে আছেন। কাঁচা পাটের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত না বদলালে অর্জুন কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে মিছিল ও আন্দোলন করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে দল তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের মতো পদক্ষেপ করলেও তার তোয়াক্কা করছেন না তিনি। অর্জুনের কথায়, “যদি মানুষই আমার সঙ্গে না থাকেন, তা হলে কীসের দল? আজ আমি যেটুকু যা হয়েছি, মানুষের জন্য হয়েছি। নিজেও চটকলের শ্রমিক ছিলাম। আজ তাঁদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। ফলে দাবি না মানলে ছেড়ে কথা বলব না।”
যদি বিজেপিতে থেকে ‘মানুষের জন্য কাজ’ করতে না পারেন, তবে কি দলবদল করবেন? অর্জুনের জবাব, “সেটা এখনই এত জলদি বলতে চাইছি না। ধাপে ধাপে এগোবো।” তবে এই সঙ্কটের নিরসনে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি করার জন্য অর্জুন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি লিখে অনুরোধ জানাবেন বলে জানিয়েছেন আজ।
স্বাভাবিক ভাবেই অর্জুন এ ভাবে সরব হওয়ার পরে বাংলার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন। বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে এসেছেন। আর অর্জুনের ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটলে যা হবে নিছকই ‘ঘর ওয়াপসি’। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হচ্ছে না। শুধু এটুকু মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অর্জুন আদতে তৃণমূল পরিবারেরই। ২০০১ থেকে ২০১৯— টানা তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন অর্জুন। এটাও বলা হচ্ছে, ২০০৬ সালে তৃণমূল যখন ৩০ জনের বিধায়কে নেমে গেল, তখনও অর্জুন বিধায়ক ছিলেন। পাশাপাশি তৃণমূল নেতত্বের দাবি, শত্রুঘ্ন সিনহার জয়ের পরে অবাঙালি ভোটারদের মধ্যেও তৃণমূলের জোরদার হাওয়া বইছে। সব মিলিয়ে অর্জুন সিংহ মান অভিমান ভুলে ‘ঘর ওয়াপসি’ করবেন কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।
আপাতত পাটের দামের বিষয়টিকে উচ্চস্বরে নিয়ে গিয়ে কেন্দ্র-বিরোধিতার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন অর্জুন। তিনি ১৯ তারিখ একটি চিঠি দিয়েছেন পীযূষকে। অভিযোগ, চটকলগুলি পাটচাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা পণ্যের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ায় প্রবল সঙ্কটে পড়ে গিয়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য মানুষ। অর্জুনের বক্তব্য, অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক। তিনি একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে সম্প্রতি দেখাও করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে। তাঁর কথায়, “মন্ত্রীকে বোঝালেও উনি কিছুই বুঝতে চাইছেন না। সোমবার জুট বোর্ডের বৈঠকে আমি গলা তুলব। যদি কথা না শোনা হয়, জুট কমিশনারকে ঘেরাও থেকে যন্তরমন্তরে ধর্না, অবস্থান, সবই করব। প্রায় দু’কোটি মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত।”