—ফাইল চিত্র।
চলতি রেল বাজেটে হঠাৎই এক দশক আগের রেল বাজেটের ছায়া!
আলোচনা চলছিল পীযূষ গয়ালের রেল মন্ত্রকের বাজেট নিয়ে। তাতে বলতে উঠে আজ হঠাৎই রেলমন্ত্রী হিসাবে তৃণমূল নেত্রীর ভূমিকা নিয়ে সরব হন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ঘোষিত প্রকল্পগুলির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকারের কাছে জবাবদিহি চান তিনি। আজ অর্জুন যখন আক্রমণ শানাচ্ছেন তখন ঘটনাচক্রে স্পিকারের আসনে বসে তৃণমূলেরই কাকলি ঘোষ দস্তিদার। অন্য সময়ে সাংসদ হিসাবে যিনি তৃণমূল-বিরোধী কথা শুনলেই রে-রে করে ওঠেন, সেই কাকলিকে আজ স্পিকারের আসনে বসে শুনতে হয় অর্জুনের সব অভিযোগ। পরিস্থিতি দেখে হেসে ফেলেন বিজেপি সাংসদেরাও। মুচকি হাসি দেখা যায় কাকলির মুখেও।
রেল বাজেটে পশ্চিমবঙ্গ বৈষম্যের শিকার হয়েছে বলে আজ সরব হন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, রেল বাজেটে বঞ্চিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সমেত গোটা পূর্ব ভারত। রাজ্যের সমস্ত প্রকল্পে নামমাত্র টাকা বাড়ানো হয়েছে। বঞ্চনার শিকার কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পও। গত সরকারের আমলে রেলের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকার সময়ে রেলে হওয়া দুর্নীতি নিয়েও আজ সরব হন তিনি। সুদীপবাবু বলেন, বিদেশিদের জন্য চলা মহারাজা এক্সপ্রেস, প্যালেস অন হুইল্স-এর মতো ট্রেনগুলিতে যাত্রী সংখ্যা ত্রিশ শতাংশ কমে গিয়েছে। তৃণমূল সাংসদদের অভিযোগ, যাত্রী না হওয়ায় একাধিক পদস্থ রেল অফিসার ওই ট্রেনগুলিতে নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ‘কমপ্লিমেন্টারি’ ভিত্তিতে ভ্রমণ করার তথ্য রয়েছে তাঁর কাছে। সরকার চাইলে এ বিষয়ে রেলের স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট রেলমন্ত্রীর হাতে তুলে দেবেন তিনি।
তৃণমূলের সাংসদ মালা রায়ের অভিযোগ, বাজেটে আয়ের কোনও দিশা না-থাকায় প্রকল্প রূপায়ণে ফের বিভিন্ন অর্থকরী সংস্থার দ্বারস্থ হতে হবে রেলকে। বাড়বে ঋণ। যা এয়ার ইন্ডিয়ার মতোই রেলকে ভবিষ্যতে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেবে। নরেন্দ্র মোদীর বুলেট ট্রেন প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে মালা দাবি করেন, ‘‘জমি জটে আটকে যাওয়ায় এখন মুম্বই-গুজরাতের পরিবর্তে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে প্রতীকি ভাবে ওই ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’’ দলের আর এক সাংসদ অপরূপা পোদ্দার লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো, রেলে খালি পদে নিয়োগ, দূরপাল্লার ট্রেনে খাবারের নিম্নমানের প্রশ্নে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
রেলকে ধীরে ধীরে বেসরকারিকরণের পথে ঠেলে দেওয়ার প্রতিবাদে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব রয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। বিতর্কের শুরুতে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী একই অভিযোগে সরব হয়ে বলেন, রায়বরেলী-সহ রেলের সাতটি কারখানাকে আলাদা সংস্থা করে বিক্রি করার পরিকল্পনা নিয়েছে মোদী সরকার। অধীরের অভিযোগ, ‘‘সরকার বুলেট ট্রেনের কথা বলছে, অথচ মালগাড়িতে পণ্য পরিবহণ কমছে। যা রেলের মূল আয়ের উৎস। অথচ সরকারের তাতে নজরই নেই।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।