ফাইল ছবি
দেশের জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ, বাতিল পাঁচশোরও বেশি ট্রেন। খোদ রাজধানী দিল্লির সীমানায় ভয়াবহ যানজটে আটকে গাড়ির পর গাড়ি। আগ্নিপথ-বিরোধিতায় ডাকা ভারত বন্ধে এই ছবিই দেখা গিয়েছে আজ। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের বিরোধিতার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অগ্নিপথ প্রকল্পের নাম না করে বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে অনেক সিদ্ধান্ত অন্যায় মনে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি দেশ গড়ার কাজে সাহায্য করে।’’
সেনাবাহিনীর নিয়োগে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতায় ডাকা আজকের ভারত বন্ধের আগেই সরকার ৩৫টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে নিষিদ্ধ করেছিল ভুয়ো খবর ছড়ানো ও গোলমালের আশঙ্কায়। গ্রুপগুলি সম্পর্কে সরকার অবশ্য বিস্তৃত তথ্য হাজির করেনি। তবে আজ বনধের সময়ে বড়সড় গোলমালের খবর মেলেনি। গত কয়েকদিনের হিংসার ঘটনার পর আজও গোলমালের আশঙ্কায় ৫২৯টি ট্রেন বাতিল করেছে রেল মন্ত্রক। এর মধ্যে ৩৪৮টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন, ১৮১টি মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেন। মন্ত্রক জানিয়েছে, আরও বন্ধের প্রভাব পড়েছে ৫৩৯টি ট্রেনের যাত্রায়।
বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা ভারত বন্ধকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তার জোরদার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির আজ দিল্লিতে অগ্নিপথ-বিরোধিতায় প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। যন্তর মন্তরে ছিল কংগ্রেসের সত্যাগ্রহ। দিল্লির কনট প্লেসের কাছে শিবাজী ব্রিজ স্টেশনে রেল অবরোধ করলে যুব কংগ্রেসের কিছু কর্মীকে আটক করা হয়। আজ সকাল থেকেই দিল্লি ও গুরুগ্রামের মধ্যে সংযোগকারী এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যাপক যানজট শুরু হয়ে যায়। সারহাউল চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িগুলিকে চেক করতে শুরু করলে যানবাহনের লম্বা লাইন পড়ে যায়। একই হাল হয়েছে দিল্লি-নয়ডা ফ্লাইওয়ে, মিরাট এক্সপ্রেসওয়েতেও। দিল্লির সীমানায় নজরদারির পাশাপাশি শহরের ভিতরে বাস পরিষেবাতেও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল আজ। হরিয়ানার ফতেহাবাদে বেশ কিছু বিক্ষোভকারী লালবাতি চক আটকে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। রোহতকের বিভিন্ন এলাকাতেও প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়। অগ্নিপথ-বিক্ষোভের কথা ভেবে হরিয়ানার দু’টি জেলায় কোচিং সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন।
বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানার মতো রাজ্যগুলিতেও অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতায় বিক্ষোভ হয়েছে। গত সপ্তাহে দানাপুর রেলস্টেশনে হিংসার ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এদিনই পটনায় একটি কোচিং সেন্টারে হানা দিয়েছে। ওই সেন্টারের কর্তার বাড়িতেও পৌঁছয় পুলিশ।
বন্ধের কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেন বাতিল হওয়ায় আজ প্রবল দুর্ভোগের মধ্য পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। অম্বালা, রেওয়ারি, লুধিয়ানা, অমৃতসর, জলন্ধরের মতো স্টেশনগুলিতে যাতে ভাঙচুর না হয়, সেজন্য আগাম সতর্কতায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পঞ্জাবে কেন্দ্রীয় সরকারের দফতরগুলিতেও বাড়ানো হয়েছিল নিরাপত্তা।
কেরল সরকারও জানিয়ে দিয়েছিল, বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে কেউ সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করার চেষ্টা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ভারত বন্ধকে ঘিরে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আজ ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের বড়সড় কোনও ঘটনা সামনে আসেনি। কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়েছেন, অগ্নিপথের বিরোধিতায় ২৪ জুন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে সংযুক্ত কিসান মোর্চা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।