রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা বৈঠকে মণিপুর থেকে ফিরে আসা ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনা এখনও শুরু হল না। কিন্তু দিনভর চলল কৌশল আর পাল্টা কৌশলের রাজনীতি। সেই সঙ্গে মণিপুর থেকে ফিরে আসা ইন্ডিয়া জোটের প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সকালে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা বৈঠকে তাঁদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হল। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সনিয়া গান্ধীও। পরিস্থিতি জানাতে রাষ্ট্রপতিরও সময় চাওয়া হচ্ছে।
আজ সকালে বিরোধীদের কিছুটা চমকে দিয়েই কেন্দ্র রাজ্যসভায় জানায়, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে রাজি কেন্দ্র। সে রাজ্যের অশান্ত পরিস্থিতিতে আলোচনার দাবিতে উত্তাল সংসদে এই কথা জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে পীযূষ বলেন, “বিরোধীরা আসলে মণিপুর নিয়ে আলোচনা চায় না। তারা যদি প্রস্তুত থাকে, তবে আমরা দুপুর ২টো থেকে আলোচনায় রাজি।”
অন্য দিকে বিরোধীদের পাল্টা দাবি, সংসদীয় বিধি ২৬৭ অনুযায়ী আলোচনা হোক মণিপুর নিয়ে। এই বিধির আওতায় কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব গৃহীত হলে, সংসদের অন্য সব কাজ মুলতবি করে সীমাহীন সময়ের জন্য আলোচনা করা যায়। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেন, “সরকার একটা ভান করছে তারা আলোচনা করতে চায়, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি নিয়ে তারা নীরব। বিজেপি যখন বিরোধী ছিল, যত ক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বিবৃতি দিতেন তারা সংসদ চলতে দিত না। সাধারণত মনমোহন কিন্তু বিবৃতি দিতেন।’’
দুপুরে বিরোধীপক্ষ প্রস্তাব দেয়, প্রধানমন্ত্রী যদি সংসদে বক্তৃতা না দিতে চান তা হলেও চলবে, সে ক্ষেত্রে তিনি তাঁর বক্তব্য বিবৃতির আকারে পেশ করতে পারেন। কিন্তু তাতেও রাজি নয় সরকার। তাদের বক্তব্য, বিষয়টি আইন শৃঙ্খলার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ্যতম ব্যক্তি এর জবাব দেওয়ার। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “দায়সারা দেড় ঘণ্টার আলোচনা আমরা চাই না। মণিপুর নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সব কাজ মুলতুবি করে সবিস্তার আলোচনা চাই। এর আগে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আলোচনায় অংশ নিয়েছেন নেহরু, বাজপেয়ী, রাজীব গান্ধী, মনমোহন সিংহেরা। প্রধানমন্ত্রী আপনি কেন আসবেন না?”
আজ সকালে বিরোধী বৈঠকে মণিপুর সফর করে আসা প্রতিনিধি দলের মধ্যে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, গৌরব গগৈ, তৃণমূলের সুস্মিতা দেব দলের নেতাদের সামনে সেখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন। দু’বার মণিপুর ঘুরে আসা সুস্মিতা জানান, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। অধীরের কথায়, “এক বার সরকার পক্ষের কোনও নেতা মণিপুর গেলে ফিরে এসে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে হাল্কা চালে আর কথা বলতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সর্বদলীয় প্রতিনিধি পাঠানো।’’