অবাক করা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। ছবি: সংগৃহীত।
বাবা রামদেবের গুরু কে জানেন? অথবা কালী কমলি বাবার ডেরা কোথায় তা জানা আছে? প্রশ্নগুলির উত্তর জানা থাকলে সুবিধা করতে পারেন হরিয়ানার সরকারি চাকরিতে। কারণ, সে রাজ্যের সরকারি চাকরির পরীক্ষায় এমনতর প্রশ্নেরই মুখোমুখি হতে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। যা নিয়েই সমালোচনার মুখে হরিয়ানার বিজেপি সরকার।
গত দু’বছর ধরেই সরকারি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ‘সাধারণ জ্ঞান’ বিভাগে জায়গা করে নিয়েছে এই ধরনের একাধিক প্রশ্ন। পুলিশ কনস্টেবল, করণিক, ফুড সাব-ইনস্পেক্টর, রাজস্ব আধিকারিক, স্ট্যাটিসটিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এমনকী পাম্প অপারেটরের কাজের জন্য আবেদন করলেও তার পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন থাকছে। সাধারণ পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে সমাজকর্মী— সকলেরই এ ধরনের প্রশ্ন উপযোগিতা নিয়ে সরব হয়েছেন। তবে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত নয় রাজ্যের বিজেপি সরকার। বরং সরকারের যুক্তি, সমাজের গঠনতন্ত্রকে মাথায় রেখেই এ ধরনের প্রশ্ন রাখা হয়েছে পরীক্ষায়। রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র রমন মালিক বলেন, “ওই প্রশ্নগুলি আসলে সমাজের পরিকাঠামোর সঙ্গে জড়িত। ফলে প্রতিযোগীর তা জানা উচিত। সামাজিক বৈচিত্রের কথাও জানা থাকলে সফল পরীক্ষার্থীরা মানুষের কাজেও আসতে পারবেন।”
আরও পড়ুন
এ বার নতুন মৃত্যু দূত রূপে হাজির লালপোকা
দিনেদুপুরে ধর্ষণ রাস্তায়, প্রতিবাদ না করে ভিডিও
তবে সরকারের এই যুক্তি মানতে নারাজ প্রতিযোগীদের একাংশ। পুলিশ কনস্টেবল পদ ও বাস কনডাক্টর পদের জন্য চলতি বছরে পরীক্ষা দিয়েছেন অলোক কুমার। তিনি বলেন, “এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর কোনও বইতেই পাওয়া যায় না। কিন্তু, বার বারই তা প্রশ্নপত্রে থাকছে। এ ধরনের প্রশ্ন রাখার পিছনে কী যুক্তি কাজ করে তা বুঝতে পারি না। এ বিষয়ে আমরা সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।”
রাজ্যের সরকারি চাকরিগুলির নিয়োগকারী হরিয়ানা স্টাফ সিলেকশন কমিশন (এইচএসএসসি) কর্তৃপক্ষও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এইচএসএসসি-র সচিব মহাবীর কৌশিক বলেন, “সংবাদমাধ্যমে কথা বলার এক্তিয়ার নেই আমার। এ বিষয়ে যা বলার চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করুন।” কিন্তু, চেয়ারম্যান ভরতভূষণ ভারতীও সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে চাননি। তবে এ নিয়ে সমালোচনা করতে ছাড়েননি সমাজকর্মী তথা হাইকোর্টের আইনজীবী রাজীব গোদরা। তাঁর দাবি, “এ ধরনের প্রশ্ন আসলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার আসল ছবিটা তুলে ধরে।” তাঁর মতে, “সরকারি পরীক্ষায় এমন প্রশ্নই রাখা উচিত যাতে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে কাজে আসে। যাতে সফল পরীক্ষার্থীরা দেশ গঠনে নিজেকে নিয়োগ করতে পারেন।”