ছবি: সংগৃহীত
কেউ ঋণ নিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক থেকে। কেউ আবার টাকা জোগাড় করতে ছুটে গিয়েছিলেন সুদখোর মহাজনের দরজায়। কিন্তু সেই ধার শোধ করতে না পেরে হতাশ হয়ে তিন জন চাষি একই দিনে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরের ঘটনার পরে চাষিদের বিক্ষোভের আঁচ যখন একে একে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন গত ২৪ ঘণ্টায় ফের মধ্যপ্রদেশেই ঘটে গিয়েছে ওই কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে যা আরও চাপে ফেলে দিয়েছে।
রাজ্যের সিহোর জেলার জামুনিয়া খুর্দ গ্রামে পঞ্চান্ন বছর বয়সি বংশীলাল মীনা আজ সকালে আত্মহত্যা করেন। তার ছেলে মনোজ জানিয়েছেন, ৯ একর জমির মালিক বংশীলাল ব্যাঙ্কের পাশাপাশি সুদখোরদের থেকেও মোট ১১ লক্ষ টাকা ধার করেছিলেন। কিন্তু টাকা শোধ করতে না পারেননি তিনি। বিদিশা জেলায় বামোর গ্রামের আর এক চাষি জীবন সিংহ মীনা আত্মহত্যা করেছেন গত কাল। নিজেরই ক্ষেতের পাশে একটি গাছের ডালে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র কৃষক যুদ্ধের ডাক মাওবাদীদের
পরিবারের সস্যদের দাবি, বিরাট ঋণের বোঝা থেকে উদ্ধারের পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না ওই চাষি। সেই কারণেই বেছে নিয়েছেন চরম পথ। নিমুখ জেলার পিপলিয়া ব্যাস গ্রামে গত কাল বিকেলে আত্মহত্যা করেন প্যায়ারেলাল ওদ নামে এক কৃষক। ষাট বছর বয়সি ওই চাষিটি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু শোধ দিতে পারেননি।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে পর পর তিন জন চাষির আত্মহত্যার খবর প্রবল চাপে ফেলে দিছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে। এমনকী, তাঁর নিজের জেলা সিহোরেই এ মাসে পাঁচ জন চাষি আত্মহত্মা করেছেন। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের উদ্দেশে তোপ দেগেছে কংগ্রেস। সনিয়া গাঁধীর দলের অভিযোগ, চাষিদের সঙ্কট থেকে উদ্ধার করতে কোনও পদক্ষেপ করছে না নরেন্দ্র মোদী সরকার। কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মন্তব্য, ‘‘মোদী সরকার আসলে কিষাণ মুক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখছে!’’
মধ্যপ্রদেশে কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে নিশানা করে আন্দোলনে নেমেছিল দেশের কৃষকদের বিভিন্ন সংগঠন। যোগ নিয়ে মোদীর প্রচারের মুখে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায় তারা। তাই আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে দেশের হাইওয়েগুলিতে শবাসন করার পরিকল্পনা নিয়েছে চাষিদের ওই সংগঠনগুলি।