আনন্দে উচ্ছ্বল। শিক্ষকদের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান ও কলা শাখায় শীর্ষ স্থানাধিকারী অঙ্কুরজ্যোতি বরা (বাঁ দিকে) ও রূপশিখা কলিকা। ছবি: পিটিআই।
উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান ও কলা শাখায় প্রথম স্থানাধিকারী দুই ছাত্রই নগাঁও জেলার। একই কলেজের। এদের মধ্যে বিজ্ঞানে প্রথম হওয়া অঙ্কুরজ্যোতি ও কলা শাখায় প্রথম রূপশিখা কলিতা দু’জনই পিতৃহীন। অভাবের সঙ্গে লড়াই করে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেছে তারা।
৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৮৮ নম্বর পেয়ে বিজ্ঞানে প্রথম হওয়া নগাঁও রামানুজন কলেজের ছাত্র অঙ্কুরজ্যোতি বরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারায়। রহার বাসিন্দা প্রয়াত রমেশ বরা ও অনু বরার পুত্র অঙ্কুর। বাবা ছিলেন ইলেকট্রিসিয়ান। তার আর্থিক দুরবস্থার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ বরা তাঁর পড়াশোনার খরচের ব্যবস্থা করেছিলেন। দিদি জুরি বরা নিজে টিউশন করে ভাইয়ের পড়াশোনার বাকি খরচ চালাতেন। আজ প্রথম হওয়ার পরে বেজায় খুশি অঙ্কুরজ্যোতি তার মা, দিদি ও দিলীপবাবুর প্রতি তার অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জানায়। সে বলে, ‘‘আমি প্রথমে সুনাগরিক হতে চাই। তারপরের ইচ্ছে, ভাল ইঞ্জিনিয়ার হব।’’ তাঁর প্রিয় সাহিত্যিক মামনি রায়সম গোস্বামী। প্রিয় বই মামরে ধরা তরোয়াল।
অন্য দিকে, কলা বিভাগে ৪৮৬ নম্বর পাওয়া রামানুজন কলেজের ছাত্রী রূপশিখা কলিতা লামডিং বনাঞ্চল লাগোয়া গোঁসাইগাঁওয়ের বাসিন্দা। বাবা বিপুল কলিতা শঙ্করদেব হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক ছিলেন। ২০১২ সালে এক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। আর্থিক অনটনের মুখে পড়েন স্ত্রী সোনালি কলিতা ও মেয়ে রূপশিখা। তবে তার এতটুকু আঁচ লেখাপড়ায় পড়তে দেয়নি রূপশিখা। আজ ফল বেরনোর পর বার বার তার মনে পড়ছে বাবার কথা। তার কথায়, ‘‘আজকের দিনটিতে বাবা থাকলে খুব আনন্দ পেতেন।’’অবসর সময় ছবি আঁকে, গান গায় সে। প্রিয় সাহিত্যিক লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া। ইতিহাস নিয়ে স্নাতক হতে সে নগাঁও কলেজে ভর্তি হতে চায়। ছোট থেকেই ইতিহাস তাঁর পছন্দের বিষয়। পরবর্তী কালে আইএএস হতে চায় প্রথমা মেয়েটি। ছোট থেকে বিদ্যুৎ সঙ্কট, পানীয় জলের সমস্যা, হাতির হানার সঙ্গে ঘর করেছে সে। তাই নতুন সরকারের কাছে তার আশা, মানুষের বিভিন্ন প্রাথমিক সমস্যা কাটাতে উদ্যোগী হবেন মন্ত্রীরা।