Ankita Bhandari

মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, মেয়ে স্কুলের ‘টপার’, রিসর্টে কাজ করে পরিবারের দারিদ্র কাটানোর স্বপ্ন ছিল অঙ্কিতার

ছোট থেকেই পরিবারের দারিদ্র কাটানোর স্বপ্ন দেখতেন অঙ্কিতা। তাই স্কুলের ‘টপার’ হওয়া সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষার বদলে রিসর্টে চাকরি নেন। কিন্তু সেই চাকরিই যে কাল হবে, তা কে জানত!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:২১
Share:

ফাইল ছবি।

মা কাজ করেন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। ছোট থেকেই অঙ্কিতার ধ্যানজ্ঞান মা-বাবাকে একটু সুখের সন্ধান দেওয়া। আর তা করতে গিয়ে পড়াশোনায় মনপ্রাণ ঢেলে দিয়েছিল ১৯ বছরের তরুণী। স্কুলের ‘টপার’ অঙ্কিতা যখন রিসর্টে চাকরি নেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু অঙ্কিতার বক্তব্য ছিল, পরিবারের উপার্জন না-বাড়লে যে আর চলছে না। মায়ের উপর আর কত চাপ দেবেন?

Advertisement

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় দুর্দান্ত পৌড়ী গঢ়বালের বাসিন্দা অঙ্কিতা ভান্ডারি। পাড়াপড়শিরা বলছেন, ছোট থেকেই পরিবারের দারিদ্র কাটানোর স্বপ্ন দেখতেন অঙ্কিতা। আর তাই স্কুলের ‘টপার’ হওয়া সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষার বদলে রিসর্টে চাকরি নেন তিনি। কিন্তু সেই চাকরিই যে কাল হবে, তা কে জানত!

স্কুলে অঙ্কিতার সহপাঠী বিবেক বলছেন, ‘‘আমি অঙ্কিতার সঙ্গে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। ২০২০-তে অঙ্কিতা আমাদের বিআর মডার্ন স্কুলে টপ করেছিল। সেরা ছাত্রীর পুরষ্কারও পেয়েছিল অঙ্কিতা। আমি কখনও ওঁকে গম্ভীর দেখিনি। সব সময় অন্যের প্রয়োজনে অঙ্কিতাকে দেখতে পেতাম। তাঁর এই পরিণতি বিশ্বাস করতে পারছি না।’’

Advertisement

বিআর মডার্ন স্কুলের প্রিন্সিপাল জানাচ্ছেন, অঙ্কিতা ওই স্কুলের অন্যতম সেরা পড়ুয়াদের অন্যতম ছিলেন। ২০১১-য় স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর কোনও দিন তাঁর নামে কাউকে কোনও অভিযোগ করতে শোনেননি তিনি। দ্বাদশ শ্রেণিতে ৮৮ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাস করেন অঙ্কিতা। সব সময় হাসিমুখের অঙ্কিতা উচ্চশিক্ষা নিয়ে জীবনে আরও এগিয়ে যাবে, এমনটাই মনে করেছিলেন প্রিন্সিপাল। কিন্তু কোথা যে কী হয়ে গেল… চোখ ভিজে আসে অঙ্কিতার শিক্ষিকার।

বাড়িতে মায়ের সামান্য রোজগার। ভাইয়ের পড়ার খরচ ক্রমেই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে অঙ্কিতা নিজের উচ্চাকাঙ্খায় ইতি টেনে চাকরিতে ঢোকেন। যোগ দেন পৌড়ী গঢ়বালের একটি বেসরকারি রিসর্টে রিসেপশনিস্ট হিসেবে। গত ১৮-১৯ সেপ্টেম্বর থেকে হাসিখুশি অঙ্কিতার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শনিবার সকালে অঙ্কিতার প্রাণহীন মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক বিজেপি নেতার ছেলে পুলকিত আর্য এবং তাঁর দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে। তাদের তিন জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

নিজের উচ্চাকাঙ্খায় ইতি টেনে যে অঙ্কিতা পরিবারের দারিদ্র কাটাতে চাকরি নিয়েছিল রিসর্টে, সেই চাকরি করতে গিয়েই এ ভাবে অকালে চলে যেতে হল হাসিখুশি এই তরুণীকে। যে ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর উত্তেজিত জনতার ক্ষোভ আছড়ে পড়ে বিজেপি নেতার ছেলের উপর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement