হাইকোর্টের রায় সত্ত্বেও বলি চলছে ত্রিপুরায়

পশু-পাখি বলির বিরুদ্ধে ত্রিপুরা হাইকোর্ট রায় দিয়েছে শুক্রবার। গত কাল অফিস বন্ধ থাকার কারণে গোমতী জেলা প্রশাসন সরকারি আদেশ হাতে পায়নি।

Advertisement

বাপি রায়চৌধুরী

আগরতলা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পুজোয় পশু বলি চলছে ত্রিপুরায়। গত কাল দুপুরে, রাতে, এমনকি আজও হয়েছে।

Advertisement

পশু-পাখি বলির বিরুদ্ধে ত্রিপুরা হাইকোর্ট রায় দিয়েছে শুক্রবার। গত কাল অফিস বন্ধ থাকার কারণে গোমতী জেলা প্রশাসন সরকারি আদেশ হাতে পায়নি। তাই গত কাল দুপুরে উদয়পুরের ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে বলি হয়। এ দিন ছিল অমাবস্যা। সেই উপলক্ষে নিশিপূজার জন্যে পাঁচটি পাঁঠা ও একটি মহিষ বলির চল রয়েছে। গোমতী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রাণেশলাল চাকমা এখন জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনিই এই মন্দিরের প্রধান সেবায়েত। গত কাল বিকেলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সরকারি আদেশনামা পাইনি। তাই বলি হবে।’’ আবার সন্ধের পরে তিনিই জানান, বলি বন্ধ করা হয়েছে। এর পরে মন্দিরে বলির উপরে নিষেধাজ্ঞার নোটিসও লাগানো হয়েছিল। কিন্তু গত কাল নিশিরাতে, এমনকি আজও যথারীতি বলি হয়েছে ওই মন্দিরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশাসনকে নিয়ে শুরু হয়েছে রঙ্গ-তামাশা-বিদ্রুপ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জানান, সরকারি আদেশ না আসায় গত কাল তিনি বলি বন্ধের কোনও কথা বলেননি। মন্দিরে তবে বলি বন্ধের নোটিস লাগিয়েছে কে? এই বিষয়েও তিনি জানেন না। সোমবার অফিস খুললে দেখবেন।

১৫০১ সালে তৈরি মন্দিরটিকে হিন্দুদের একান্ন পীঠের একটি বলে মানা হয়। এখানকার প্রধান পুরোহিত চন্দন চক্রবর্তী জানান, ৫০০ বছর ধরে চলছে বলি। গত রাতে এবং আজও বলি হয়েছে। বলি বন্ধের সরকারি কোনও নির্দেশ তিনি পাননি। মন্দিরে নোটিস লাগানো ও ছিঁড়ে ফেলার কথা শুনেছেন। তবে নিজে দেখেননি।

Advertisement

ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোত কিশোরমাণিক্য দেববর্মণ আজ জানিয়েছেন, হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। নিজে জীবহত্যার বিরোধী হলেও তাঁর বক্তব্য, অন্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যেও বলির চল রয়েছে। সে সবও তবে নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজ্যে আদিবাসী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন পশু ও পাখি বলির চল রয়েছে। উচ্চ আদালত এই প্রথা নিয়ে বিকল্প কোনও পথের সন্ধান দিতে পারত। তাঁর আরও যুক্তি, ভারতভুক্তি নিয়ে ত্রিপুরার মহারাজাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, তা সংবিধান-স্বীকৃত। একে বাতিল করার ক্ষমতা হাইকোর্টের নেই। খুব শীঘ্রই তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement