ত্রিপুরার মন্দিরে ফের নিষিদ্ধ বলি

কয়েক বছর আগে ত্রিপুরা রাজবাড়ির দুর্গা পুজো দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ সুভাষ ভট্টাচার্য।

Advertisement

বাপি রায়চৌধুরী

আগরতলা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

‘জীবজননীর পূজার ছলে’ জীব হত্যা ফের নিষিদ্ধ হল ত্রিপুরায়। ‘রাজর্ষি’র ত্রিপুরারাজ গোবিন্দমাণিক্যের পরে এ বার নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি অরিন্দম লোধ। তাঁদের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্যের কোনও মন্দিরে আর বলি দেওয়া যাবে না।

Advertisement

কয়েক বছর আগে ত্রিপুরা রাজবাড়ির দুর্গা পুজো দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ সুভাষ ভট্টাচার্য। সরকার পরিচালিত এই পুজোয় নবমীর দিন মহিষ বলি দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন তিনি। এর পর তিন বছর ধরে হিন্দু শাস্ত্রের নানা দিক খতিয়ে দেখে গত বছর একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সুভাষবাবু। গত তিন দিন ধরে সেই মামলার শুনানি চলে ডিভিশন বেঞ্চে। রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল অরুণকান্তি ভৌমিক বলি বন্ধের বিরোধিতা করে যুক্তি দেন, শত শত বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। তা ছাড়া, ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরার রাজারা যখন ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে সামিল হন, তখন সমস্ত মন্দিরের পুজো এবং বলির জন্যে খরচ রাজ্য সরকারকে বহন করতে হবে বলে চুক্তি হয়।

সুভাষবাবু পাল্টা যুক্তি দিয়ে দেখান, বেদ-উপনিষদে কোথাও লেখা নেই যে পশু বলি বন্ধ হলে হিন্দু ধর্ম পালনে বাধা তৈরি হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায়ের উদাহরণও টানেন তিনি। সুভাষবাবু এ দিন বলেন, ‘‘রাজন্য আমলের মন্দিরগুলিতে সরকারি খরচে বলি দিতে হবে, এমন কোনও লিখিত দলিল আদালতে রাজ্য পেশ করতে পারেনি।’’

Advertisement

এই অবস্থায় সরকারের যুক্তি খারিজ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, পশু বলির অধিকার সংবিধানের ২৫ ধারা অনুযায়ী ধর্মের অধিকারের আওতায় আসে না। তাঁদের রায়ে বলা হয়েছে, রাজ্যের সব মন্দিরে সরকার বা কোনও ব্যক্তি, কেউই পশু বা পাখি বলি দিতে পারবে না। তবে ‘জীব হত্যা’ করলে ‘নির্বাসন’— গোবিন্দমাণিক্যের মতো এমন চরম শাস্তির বিধান অবশ্য ত্রিপুরা হাইকোর্ট দেয়নি!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement