বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মুম্বই। ছবি: পিটিআই।
বৃষ্টি যেন পিছু ছাড়ছে না মুম্বইয়ের! গত কয়েক সপ্তাহের লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাজার থেকে রেললাইন, সাবওয়ে থেকে সড়কপথ, উপকূল থেকে বিমানবন্দর— জল থইথই সবই। অবিরাম বৃষ্টিতে নিত্য দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার অন্ধেরী সাবওয়ে আবার জলমগ্ন হয়ে পড়ায় প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে শুক্রবার এই পথে সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল যান চলাচল। এস ভি রোড দিয়ে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। জল নেমে যাওয়ার পর বিকালের দিকে সাবওয়ে খুলে দেওয়া হয়। তাতে যানজট সামান্য কমলেও পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। একই রকম জল থইথই অবস্থা মুম্বই বিমানবন্দরেরও।
শুক্রবার ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টির পর শনিবার সকাল থেকে ফের ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে মধ্য মুম্বইয়ে। পূর্ব ও পশ্চিম মুম্বইয়ে বৃষ্টি হয়েছে যথাক্রমে ৫৭ ও ৬৭ মিলিমিটার। উত্তাল আরব সাগর। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টাতেও মুম্বই সংলগ্ন সাগরে ৪.২৪ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। বৃষ্টির জেরে প্রভাব পড়েছে রেল পরিষেবাতেও। জলে ডুবে রয়েছে একাধিক রেললাইন। জোয়ারের জল ঢুকে পড়েছে চুনাভট্টি ট্র্যাকে। ফলে সেন্ট্রাল, ওয়েস্টার্ন এবং হারবার লাইনে দেরিতে চলছে একাধিক ট্রেন। এ ছাড়া, সময়সূচি বদলাতে হয়েছে দূরপাল্লার বেশ কিছু ট্রেনের।
গত বেশ কিছু দিন ধরেই ভারী বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন মুম্বইয়ের বেশির ভাগ অঞ্চল। কিন্তু বৃষ্টির হাত থেকে যে আপাতত কোনও নিস্তার নেই, তা জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বরং বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই চিন্তা বেড়েছে মুম্বইবাসীর। এমনিতে বেশির ভাগ এলাকায় জল নামেনি, তার মধ্যে আবার ভারী বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় ত্রস্ত তাঁরা। মুম্বই এবং ঠাণে— এই দুই জেলায় আগে থেকেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। গত সপ্তাহে মধ্য মহারাষ্ট্রে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছিল মৌসম ভবন। চলতি সপ্তাহের শেষেও তা জারি রইল। আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য ঠাণেতে কমলা সতর্কতা এবং মুম্বই এবং পালঘরে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পড়ুয়াদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে নাগপুরে এক দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর পাশাপাশি, জলোচ্ছ্বাসের কারণে আপাতত শহরবাসীকে সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মুম্বই এবং ঠাণে ছাড়াও বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে রায়গড়, রত্নগিরি, সিন্ধুদুর্গ জেলা এবং কোঙ্কণ উপকূল অঞ্চলেও।