National news

চা-শিঙাড়া খেয়ে দিন কাটত, মুম্বইয়ের বস্তির ছেলে আজ আমেরিকার গবেষক

বস্তির বাসিন্দা থেকে এখন আমেরিকার একজন গবেষক।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ১০:৩৩
Share:
০১ ১২

মুম্বইয়ের বস্তিতে একটা ছোট ঘরে মায়ের সঙ্গে থাকতেন জয়কুমার বৈদ্য। দিনের শেষে পাউরুটি, শিঙাড়া বা চা জুটত তাঁদের কপালে। সেই জয়কুমারই এখন আমেরিকায়। বস্তির বাসিন্দা থেকে এখন আমেরিকার একজন গবেষক।

০২ ১২

মুম্বইয়ের কুরলা বস্তিতে তাঁরা থাকতেন। শ্বশুর বাড়ির লোকেরা নলিনীকে বার করে দিয়েছিলেন। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ঠাঁই নেন ওই বস্তিতে। ২০০৩ সাল থেকে তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। নলিনীর মা একটা চাকরি করতেন। মেয়েকে তিনি অর্থ সাহায্যও করতেন। কিন্তু ২০০৩ সালে অসুস্থতার জন্য তাঁকে চাকরি ছাড়তে হয়।

Advertisement
০৩ ১২

দরিদ্রতার প্রভাব যাতে ছেলের পড়াশোনার উপরে না পড়ে তার জন্য মা নলিনী অনেক কিছু করেছেন। যখন যা কাজ পেয়েছেন তা করেছেন। কখনও শিঙাড়া, বড়াপাউ খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। কিন্তু তাতে কি আর সম্ভব!

০৪ ১২

এত কষ্ট হলেও হাল ছাড়েননি জয়কুমার মন শক্ত করে রেখেছিলেন তাঁর মা-ও। স্কুলে মাইনে দিতে না পারায় স্কুল কর্তৃপক্ষ একবার নলিনীকে জানিয়েছিলেন তাঁর ছেলেকে গাড়ি চালানো শিখতে বলেছিলেন। টাকা না থাকলে পড়াশোনা হয় না।

০৫ ১২

এরপর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মেসকো-র সঙ্গে যোগাযোগ হয় নলিনীর। তারাই স্কুলে বাকি থাকা মাইনের অনেকটা পরিশোধ করে দেয়। কলেজে পড়ার সময় সুদ ছাড়া ঋণও দেয় জয়কুমারকে।

০৬ ১২

কিন্তু কারও সাহায্যে নির্ভরশীল হয়ে থাকা পছন্দ ছিল না তাঁর। স্থানীয় একটা টিভি মেরামতির দোকানে কাজ শুরু করেন। মাসে ৪০০০ টাকা মাইনে পেতেন তিনি। পাশাপাশি স্থানীয় পড়ুয়াদের টিউশন দিতেও শুরু করেন।

০৭ ১২

কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের জোরে কেজে সোমাইয়া কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ইলেকট্রিক্যালে স্নাতক হন। রোবোটিকসে তিনটে জাতীয় এবং চারটে রাজ্যস্তরের পুরস্কারও পান জয়কুমার।

০৮ ১২

এটাই ছিল তাঁর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। কলেজে পড়াকালীন প্রথম চাকরির প্রস্তাব আসে লার্সেন অ্যান্ড টুবরো থেকে। কলেজ পাস করেই তিনি টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর)-এ কাজ পান। মাইনে ৩০,০০০ টাকা।

০৯ ১২

দু’মাসের মাইনে জমিয়েই প্রথম নিজের বাড়ির জন্য একটা এসি কেনে। জিআরই আর টিওইএফএল পরীক্ষার জন্য ফর্মপূরণ করেন। ফর্মের জন্য অনেকটা টাকা খরচ হয়ে যায়। সেই ঘাটতি মেটাতে এবার অনলাইন টিউশন শুরু করেন জয়কুমার।

১০ ১২

তিন বছর টাটা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করার পর জয়কুমার পিএইচডি শুরু করেন। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক মানের জার্নালে তাঁর দু’টো গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। সেই গবেষণা ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

১১ ১২

রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়ায় যোগ দেন ২৪ বছরের জয়কুমার। একসময়ে যাঁদের মাসের শেষে হাতে ১০ টাকা পড়ে থাকত, আজ তাঁরই মাসিক স্টাইপেন্ড ২০০০ ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকার কিছু বেশি।

১২ ১২

এর থেকে মাত্র ৫০০ ডলার জয়কুমার নিজের খরচের জন্য রেখে দেন। বাকিটা মাকে পাঠিয়ে দেন। খুব তাড়াতাড়ি মাকেও আমেরিকায় এনে নিজের কাছে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement