জেরায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলবন্দি খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহ। দাবি পঞ্জাব পুলিশের। —ফাইল ছবি।
পঞ্জাবের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের সংগঠন চালানোর অর্থ কোথা থেকে পেতেন অমৃতপাল সিংহ, সে উৎস জানাতে অস্বীকার করেছেন তিনি। এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ডিব্রুগড়ের জেলে বন্দি এই খলিস্তানি নেতা। সোমবার ‘নিউজ়১৮’-এর একটি প্রতিবেদনে পঞ্জাব পুলিশের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনই দাবি করা হয়েছে।
‘নিউজ়১৮’-এর ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, পঞ্জাব পুলিশের দাবি, এই সংগঠন চালাতে কোথা থেকে অর্থ আসছে, জেরায় তাদের কাছে সে উৎস প্রকাশ করেননি অমৃতপাল।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ, খলিস্তানপন্থীদের সাহায্যে অমৃতপালকে ব্যবহার করছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। পঞ্জাবের মাটিতে যাতে আশি এবং নব্বইয়ের দশকের মতো জঙ্গি কার্যকলাপ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, সে উদ্দেশ্যেই অমৃতপালকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও তাঁর সংগঠনের আইনজীবীর দাবি, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেননি অমৃতপাল। উল্টে সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়ার পর মাদক সমস্যার বিরুদ্ধে অভিযান-সহ শিখদের হয়ে প্রচার চালাচ্ছিলেন। তবে ‘নিউজ়১৮’-এর ওই প্রতিবেদনে আরও দাবি, বন্দিত্ব কাটলে অপরাধের পথে হাঁটবেন না বলে জেরায় ইঙ্গিত দিয়েছেন অমৃতপাল। তবে অমৃতপালের এই ইঙ্গিতে আস্থা নেই পঞ্জাব পুলিশের। বরং তারা মনে করে, যদি তাঁর বন্দিদশা কেটে যায়, তবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে আবার সমর্থনপুষ্ট হয়ে রাষ্ট্রের শান্তি এবং সুরক্ষার পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারেন অমৃতপাল। সে কথা মাথায় রেখেই ‘নিউজ়১৮’-এর কাছে পঞ্জাব পুলিশের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, অমৃতপাল যাতে ফের সমর্থনপুষ্ট হতে না পারেন, তা নিয়ে নিশ্চিত হতে চায় প্রশাসন।
৩৬ দিন ধরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়ানোর পর ২৩ এপ্রিল, রবিবার পঞ্জাবের মোগা জেলা থেকে অমৃতপালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবশ্য তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছিল। গ্রেফতারির পর অসমের ডিব্রগড়ের কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অমৃতপালকে।
‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের নেতা অমৃতপাল যে ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’, তা মনে করছে পঞ্জাবের পুলিশ-প্রশাসন। ওই আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘অপরাধের পথে হাঁটবেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি (অমৃতপাল)। মাদক সমস্যা, ধর্মান্তরণের বিরুদ্ধেও লড়াই করবেন এবং অপরাধে জড়াবেন না বলেছেন। তবে তিনি ফিরে আসবেন এবং আগে যা করতেন, পরেও তা-ই করবেন... অমৃতপাল লম্বা রেসের ঘোড়া!’’