রাহুল গাঁধী
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আজ নতুন মোড় নিয়েছে।
সঙ্ঘ পরিবারের বিক্ষোভের মধ্যে ভারতে সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অ্যামনেস্টির দফতর। কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এই বিতর্কে মানবাধিকার সংগঠনটির পাশে দাঁড়িয়েছেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস শাসিত কর্নাটক সরকার যাতে সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র করা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ নিয়ে আর না এগোয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে কংগ্রেস। রাহুলের বার্তা পেয়েই এআইসিসি-র তরফে কর্নাটকের ভারপ্রাপ্ত নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, অভিযোগ দায়ের হলেও সংগঠনের কাউকে গ্রেফতার করার কথা রাজ্য সরকার ভাবছে না। দেশের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী বীরাপ্পা মইলিও প্রশ্ন তুলেছেন রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের যৌক্তিকতা নিয়ে।
বিতর্কের সূত্রপাত গত শনিবার। কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে বেঙ্গালুরুতে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। কাশ্মীরের কয়েকটি পরিবারকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় সেনার হাতে কী ভাবে তাদের হেনস্থা হতে হয়েছে, পরিবারগুলি সে কথা বলে। সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র অভিযোগ, এই অনুষ্ঠানেই দেশবিরোধী স্লোগান ওঠে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ।
এ দিন এআইসিসি নেতৃত্ব কর্নাটক সরকারের পদক্ষেপের ব্যাখ্যা হাজির করেন। দিগ্বিজয় সিংহের মতে, অভিযোগ এলে এফআইআর করাটা পুলিশের বাধ্যবাধকতা। দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির মতে, গোটা সংগঠনের বিরুদ্ধে এ ভাবে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা সম্ভবই নয়। তাঁর যুক্তি, অ্যামনেস্টি আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল। সেখানে কেউ কেউ স্লোগান দিয়েছিল। মইলির ব্যাখ্যা, স্লোগান তোলাটাই রাষ্ট্রদ্রোহ নয়। আর এবিভিপি চাইলেই রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনতে হবে— এরও কোনও যুক্তি নেই। এই বিতর্কের মধ্যে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে চলাটাই জরুরি।
আজ বেঙ্গালুরুর ইন্দিরা নগরে অ্যামনেস্টির দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসুচি ছিল এবিভিপি-র। পরিস্থিতি সামলাতে সংগঠনের দফতর বন্ধ করে দিতে বলে পুলিশ। সংস্থার কর্মীরা দফতর ছেড়ে বেরিয়ে যান।