‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-তে অমিতাভের ১টি প্রশ্ন ঘিরেই আপত্তি তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক। —ফাইল চিত্র।
ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গেরুয়া শিবিরের রোষে অমিতাভ বচ্চন। মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিধায়ক অভিমন্যু পওয়ার। অভিমন্যুর দাবি, টেলিভিশনে ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ শোয়ের ১টি পর্বে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁদের অপমান করার চেষ্টা করেছেন অমিতাভ। সেই সঙ্গে হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্য়ে বিভেদ তৈরির করারও চেষ্টা করা হয়েছে। অমিতাভ ছাড়াও ওই শোয়ের নির্মাতা সোনি এন্টারটেনমেন্ট টেলিভিশন-এর বিরুদ্ধেও নালিশ ঠুকেছেন অভিমন্যু। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছেন ওই বিজেপি বিধায়ক।
‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ (কেবিসি)-র দ্বাদশ সিজনের কর্মবীর স্পেশাল এপিসোড ঘিরেই যাবতীয় আপত্তি তুলেছেন লাতুর জেলার ঔসা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অভিমন্যু। এ দিন লাতুরের পুলিশ সুপার নিখিল পিঙ্গলের কাছে ২ পাতার দীর্ঘ অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। তাতে অমিতাভের বিরুদ্ধে তিনি লিখেছেন, ‘হিন্দুদের অপমান করার চেষ্টা করা হয়েছে। হিন্দু এবং বৌদ্ধরা, যাঁরা শান্তিতে সহাবস্থান করছেন, তাঁদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করারও চেষ্টা চলেছে।’
‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-এর ওই স্পেশাল এপিসোডের ১টি প্রশ্ন ঘিরেই আপত্তি তুলেছেন অভিমন্যু। ওই এপিসোডে বিশেষ অতিথি হিসাবে এসেছিলেন সমাজকর্মী বেজওয়াডা উইলসন এবং অভিনেতা অনুপ সোনি। তাঁদের প্রতি অমিতাভের প্রশ্ন ছিল: ১৯২৭-এর ২৫ ডিসেম্বর বি আর অম্বেডকর এবং তাঁর অনুগামীরা কোন গ্রন্থ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন? ৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা পুরস্কার মূল্যের ওই প্রশ্নের উত্তরে ৪টে অপশন ছিল। এ) বিষ্ণুপুরাণ, বি) ভগবত গীতা, সি) ঋকবেদ এবং ডি) মনুস্মৃতি। ওই অপশনের উত্তর না পেয়ে এর পর অমিতাভ বলেন, “১৯২৭ সালে প্রাচীন হিন্দু গ্রন্থ মনুস্মৃতির নিন্দা করেছিলেন অম্বেডকর। যা আদর্শগত ভাবে বর্ণবৈষম্য ও অস্পৃশ্যতাকে ন্যায়সঙ্গত মনে করে। এবং তিনি মনুস্মৃতির অনুলিপি পুড়িয়েছিলেন।”
আরও পড়ুন: চিনকে চাপে ফেলে বঙ্গোপসাগরে মালবার নৌ মহড়া শুরু চতুর্দেশীয় অক্ষের
অমিতাভের ওই ব্যাখ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহারাষ্ট্রের ওই বিজেপি বিধায়ক। তাঁর দাবি, “৪টে অপশনই হিন্দু ধর্ম সম্পর্কিত। এটা স্পষ্ট যে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত দেওয়াই ওই প্রশ্নের আসল উদ্দেশ্য।” এ দিন অভিমন্যু আরও বলেন, “ওই প্রশ্নের মাধ্যমে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে যেন হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলি পুড়িয়ে ফেলাই উচিত এবং হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শত্রুতার মনোভাব সৃষ্টি করাই তার আসল উদ্দেশ্য।”
আরও পড়ুন: ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি, দাবি নির্মলা সীতারমনের
ঘটনাচক্রে, অভিমন্যু মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের ঘনিষ্ঠ। ফলে অমিতাভের প্রশ্ন নিয়ে অভিযোগের পিছনে মহারাষ্ট্রের গেরুয়া শিবিরের ক্ষোভ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র গেরুয়া শিবিরের রোষই নয়, ওই প্রশ্নোত্তরের বেশ কয়েক জন নেটাগরিকেরও ক্ষোভের মুখে পড়েছেন অমিতাভ। তাঁদের দাবি, বামপন্থীদের হয়ে প্রচারের মঞ্চ হয়ে উঠেছে কেবিসি।
সাধারণ নেটাগরিকদের একাংশের পাশাপাশি এ নিয়ে সরব হয়েছেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীও। টুইটারে কেবিসি একটি অংশ শেয়ার করে তাঁর দাবি, ওই অনুষ্ঠানকে ‘কমিউনিস্টরা হাইজ্যাক’ করেছেন। বিবেকের মন্তব্য, “নিষ্পাপ শিশুরা, সাংস্কৃতিক যুদ্ধ কী ভাবে জেতা যায়, তা শিখে নাও। এটাকে বলে কোডিং!”