কান্নুর বিমানবন্দরে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
সর্বোচ্চ আদালত যা-ই বলুক, তিনি মনে করেন, কেরলের শবরীমালা মন্দিরের ‘বিশেষত্ব’ রক্ষা করা উচিত। মহিলাদেরও উচিত, অন্যদের আবেগের কথা মাথায় রাখা। সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে কেরল সরকারের তৎপরতার প্রতিবাদ যাঁরা করছেন, তাঁদের পাশে বিজেপি ‘পাহাড়ের মতো’ থাকবে বলে জানালেন তিনি। আদালতকেও মনে করালেন, এমন রায় দেওয়া উচিত, যা কার্যকর করা সম্ভব। এবং বাম জোট শাসিত রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রীকে কার্যত সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বললেন, ‘‘আয়াপ্পা-ভক্তদের পিছনে লাগলে বড়সড় মূল্য দিতে হবে।’’
আজ কেরলের কান্নুরে দলীয় মঞ্চ থেকে এই কথাগুলোই বললেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। আরও বললেন, ‘‘আগুন নিয়ে খেলছে রাজ্য। মন্দিরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি। এমন চলতে থাকলে সরকারকে টেনে নামাতে দ্বিধা করবেন না বিজেপি সমর্থকেরা।’’ যা শুনে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে, নির্বাচনে কারচুপি করবে বিজেপি। কান্নুরে অমিত শাহ যা বলেছেন, তা সুপ্রিম কোর্ট, সংবিধান এবং বিচার ব্যবস্থার উপরে আঘাত।’’
গত কালই রাত ২টো নাগাদ তিরুঅনন্তপুরমের উপকণ্ঠে একটি আশ্রমের দু’টি গাড়ি ও একটি স্কুটারে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্ট ঋতুযোগ্য মহিলাদের শবরীমালায় প্রবেশাধিকার দেওয়ার পরে সেই রায়কে স্বাগত জানিয়েছিলেন ওই আশ্রমের প্রধান, স্বামী সন্দীপানন্দ গিরি। বিজেপি যদিও ঘটনার দায় চাপিয়েছে সিপিএমের উপরে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্র বনাম শীর্ষ ব্যাঙ্কের ‘লড়াই’, বিরলকে পাল্টা আক্রমণে জেটলি
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে কেরল জুড়ে শুরু হয়েছিল শবরীমালার উপাস্য দেবতা আয়াপ্পার ভক্ত তথা গেরুয়া শিবিরের বিক্ষোভ। গ্রেফতার হন দু’হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী। অমিতের অভিযোগ, ‘‘কোর্টের রায়ের অপব্যবহার করে বিজেপি সমর্থকদের উপরে প্রতিহিংসা নিচ্ছে রাজ্য। বন্যার সময়ে তো এই সক্রিয়তা দেখা যায়নি!’’ কান্নুরে বিজেপির নতুন পার্টি অফিস উদ্বোধনের পরে অমিত আজ বক্তৃতা শুরুই করেন, ‘স্বামীয়া স্মরণং আয়াপ্পা’ মন্ত্র দিয়ে। যুক্তি দেন, ‘‘হিন্দু ধর্মে নানা আচার রয়েছে। বহু মন্দিরে শুধু মহিলা বা শুধু পুরুষদের ঢুকতে দেওয়া হয়। আয়াপ্পার অন্য কোনও মন্দিরে মহিলাদের উপরে নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু শবরীমালার দেবতা চির ব্রহ্মচারী। সেটাই এখানকার বিশেষত্ব। একে রক্ষা করতে হবে। মহিলারাও রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের বিরোধিতা করছেন।’’
শবরীমালার ঐতিহ্য রক্ষার দাবিতে ৩০ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বিজেপি বিক্ষোভ দেখাবে বলে জানান অমিত। বুঝিয়ে দেন, লোকসভায় দক্ষিণ ভারতে হিন্দুত্ব-তাসই খেলবেন তাঁরা।