কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।—ছবি পিটিআই।
জামিয়ার লাইব্রেরিতে ঢুকে উর্দিধারীদের তাণ্ডব-ফুটেজ সামনে আসতেই আজ যেন দিল্লি পুলিশের হয়ে ব্যাট করতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। তাঁর নিজেরই মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে জামিয়া প্রসঙ্গ না-টেনেই অমিত বললেন, ‘‘পুলিশের কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। পুলিশ কারও জাত-ধর্ম দেখে কাজ করে না। পুলিশ নিরপেক্ষ, কারও শত্রুও নয়। তাই তাদের প্রাপ্ত সম্মানটুকু দেওয়া উচিত।’’ দিল্লি পুলিশকে কোনও রকম প্ররোচনায় পা না-দেওয়ার বার্তাও দিলেন অমিত।
১৫ ডিসেম্বর জামিয়া ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের মারের অভিযোগ উঠেছিল দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের নিয়ে গঠিত জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটি আজই সে দিনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এনেছে। সত্যাসত্য যাচাই করা না-গেলেও, সেই ফুটেজে মারধরের পাশাপাশি লাঠি উঁচিয়ে পড়ুয়াদের শাসাতেও দেখা গিয়েছে পুলিশকে। অমিত সরাসরি সেই ফুটেজ প্রসঙ্গে না-ঢুকলেও, দিল্লি পুলিশের প্রশংসা করে কার্যত তাদের ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই পটেলের ১৯৫০-এর বক্তৃতার কিছু অংশ উদ্ধৃত করে অমিত এ দিন বলেন, ‘‘হিংসা কিংবা উস্কানি যা-ই থাক না কেন, পুলিশের উচিত শান্ত ভাবে পরিস্থিতির সামাল দেওয়া। তবে প্রয়োজনে দুষ্কৃতীদের শক্ত হাতেও মোকাবিলা করতে হবে।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্ধৃত করেও তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘আমাদের বুঝতে হবে, পুলিশ রয়েছে আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই।’’
অমিতের সঙ্গে আজ দিল্লি পুলিশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির উপরাজ্যপাল অনিল বৈজল, পুদুচেরির উপরাজ্যপাল কিরণ বেদী, দিল্লির সিপি অমূল্য পট্টনায়েক প্রমুখেরা। অমিত বললেন, ‘‘পুলিশের গঠনমূলক সমালোচনা হতেই পারে। তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কর্তব্যরত অবস্থাতেই প্রাণ গিয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার পুলিশকর্মীর।’’ প্রজাতন্ত্র-স্বাধীনতা দিবসের মতো অনুষ্ঠান-সহ বিদেশি অতিথিদের নিরপত্তা দেওয়া নিয়েও দিল্লি পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই মনে করিয়ে দিলেন, ‘দিল্লি সেফ সিটি’ প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র ৮৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে। জানালেন, দিল্লির ১৬৫টি থানা এলাকায় ১০ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। মহিলাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আরও ৯,৩০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর অনুমতি দিয়েছে তাঁর মন্ত্রক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, দিল্লির পুলিশের আবাসন নির্মাণ খাতে কেন্দ্র ১৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। অদূর ভবিষ্যতেই পুলিশের আবাসন সমস্যা মিটবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।