অমিত শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ বেঙ্গালুরুতে। ছবি: টুইটার
দেশের ঐক্য ধরে রাখতে হিন্দি ভাষার পক্ষে সওয়াল করেছেন অমিত শাহ। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘হিন্দি’ মন্তব্য ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যত বেলা বেড়েছে ততই বেড়েছে ক্ষোভের আঁচ। গত জুন মাসেই জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়ায় হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছিল। তার প্রতিবাদে তখন দক্ষিণ ভারত জুড়ে বিক্ষোভের যে চেহারা দেখা গিয়েছিল, এ দিনও সেই ছবি দেখা গিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
ইতিমধ্যেই বিজেপি সভাপতির ওই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। নিজেদের মাতৃভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান দেখানোর পক্ষেই সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন ডিএমকে সভাপতি এমকে স্ট্যালিন। মুখ খুলেছেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী ও সিদ্দারামাইয়াও।
প্রথমে অমিত শাহের মন্তব্য ও তার পরে তাঁর টুইট। তা সামনে আসতেই দেশ জুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এ নিয়ে তাঁকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন ডিএমকে সভাপতি স্ট্যালিন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি। স্ট্যালিন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত অমিত শাহের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়া। না হলে ডিএমকে আর একটি ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতি নেবে। এটা কি ইন্ডিয়া না হিন্দিয়া? ভারতের অর্থ বৈচিত্রের মধ্যেই ঐক্য। বিজেপিশাসিত সরকার এটাকে ভেঙে ফেলতে চাইছে ও তার বিরুদ্ধে যেতে চাইছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করুন।’’
আরও পড়ুন: অমিতের হিন্দি-তত্ত্বের পরই মমতার টুইট: সব ভাষা সমান সম্মানের
অমিত শাহের মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে কর্নাটকের একাধিক সংগঠন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই স্ট্যালিন বলেন, ‘‘তামিলনাড়ুর মানুষের রক্তে হিন্দি নেই। আমরা সব সময়েই হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করে এসেছি। রেল, পোস্ট অফিসে নিয়োগ পরীক্ষায় হিন্দির ব্যবহার নিয়েও সরব হয়েছি। আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছি।’’
এ নিয়ে আরএসএসকে নিশানা করেছে কর্নাটক কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, আরএসএস মানুষকে ভাগ করার জন্য গোপন অ্যাজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ দিন অমিত শাহকে আক্রমণ করেন সিদ্দারামাইয়া। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে নই, কিন্তু, তা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে।’
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী টুইট করেন, ‘আজ দেশ জুড়ে হিন্দি দিবস পালন করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি ভাষা হিসাবে কবে হিন্দির সঙ্গে কন্নড় ভাষা দিবসও পালিত হবে?’
আরও পড়ুন: ‘হিন্দি বলুন বেশি করে, হিন্দিই পারে দেশের ঐক্য অটুট রাখতে’, অমিতের মন্তব্যে আলোড়ন
অমিত শাহের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছেন এমআইএম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘হিন্দি সব ভারতবাসীর মাতৃভাষা নয়। আপনি কি এ দেশের বহু ভাষার বৈচিত্র ও সৌন্দর্যের প্রশংসা করবেন? সংবিধানের ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রত্যেক ভারতীয়কে পৃথক ভাষা, লিপি ও সংস্কৃতির অধিকার দেয়।’