দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে অমিত শাহ। সোমবার। ছবি: পিটিআই।
হাতে শুধু শাহিন বাগ। হাতে শুধু মেরুকরণ। এই অস্ত্র নিয়েই অরবিন্দ কেজরীবালকে যথাসম্ভব টক্কর দেওয়ার চেষ্টা করছেন অমিত শাহরা।
কেজরীবাল নিজে ঘোষণা করেছেন, দিল্লির সব ঘরে তিনি যাবেন। জবাবে বিজেপিও আক্রমণাত্মক হচ্ছে। কাল প্রজাতন্ত্র দিবস কেটে যাওয়ার পর ভিন্ রাজ্য থেকেও বিজেপি নেতাদের দিল্লিতে আসতে বলা হয়েছে। লক্ষ্য, শাহিন বাগকে সামনে রেখে মেরুকরণের প্রচার মহল্লায় মহল্লায় পৌঁছে দেওয়া। বিজেপির ভাষায়, ‘কার্পেট বম্বিং’। কালই অমিত বলেছিলেন, ‘‘ভোটের দিন যখন (ইভিএমের) বোতাম টিপবেন, সমস্ত রাগ ঢেলে দিয়ে টিপবেন। রাগের ‘কারেন্ট’ যেন শাহিন বাগে গিয়ে লাগে!’’ আর আজ শরজিল ইমামের পর ‘আরফিন ফতিমা’ নামে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক ছাত্রীর ভিডিয়ো সামনে এনেছে তারা। যেখানে শুধু বিজেপি নয়, সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন তুলছেন তিনি।
প্রচারে এখন রোজ শাহিন বাগের কথাই বলছেন অমিত শাহ। তিনিই এখন দলের প্রচারের প্রধান কান্ডারি। ক’দিন আগে শরজিল ইমামের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। আজ অমিত শাহ নিজেই বললেন তাঁর কথা। বললেন, ‘‘এই ভিডিয়ো আপনারা দেখেছেন। উত্তর-পূর্বকে আলাদা করার কথা বলা হচ্ছে। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। অরবিন্দ কেজরীবালের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনি কার পক্ষে? আপনি কি শাহিন বাগের পক্ষে?’’ বিজেপির মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর তো সরাসরি ‘গদ্দারদের গুলি করে মারা’র স্লোগানই তুললেন প্রচারে!
আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব পেতে লাগবে ধর্মের প্রমাণ
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও বিজেপি দফতরে গিয়ে বললেন, ‘‘শাহিন বাগের সামনে তেরঙ্গা, মহিলা-শিশু। পিছনে দেশভাগের ছক, টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং। রাহুল গাঁধী, অরবিন্দ কেজরীবাল চুপ। অথচ মণিশঙ্কর আইয়ার পাকিস্তান যাচ্ছেন। শশী তারুর জিন্নার প্রসঙ্গ তুলছেন। কেন তাঁরা বিভাজন করছেন?’’ বিজেপির ফাঁদে অবশ্য পা দিতে চাইছেন না কেজরীবাল। বরং তিনি জোর দিচ্ছেন নিজের সরকারের কাজের উপর। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে নাগাড়ে শাহিন বাগ নিয়ে মোড় ঘোরাতে চাইছে বিজেপি, আজ কেজরীকেও প্রতিক্রিয়া দিতেই হল। বললেন, ‘‘শরজিলকে গ্রেফতার করুন অমিত শাহ। শাহিন বাগের জন্য মানুষের যে সমস্যা হচ্ছে, বিজেপিরই সেখানে গিয়ে রাস্তা খোলা উচিত। বিজেপিই চাইছে না সেটা করতে। বরং নোংরা রাজনীতি করছে।’’ একই কথা বলেছেন কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীও। তাঁরও মত, ‘‘তিন তালাক বিলের সময় মুসলিম মহিলাদের জন্য প্রাণ কাঁদত প্রধানমন্ত্রীর। এখন কেন শাহিন বাগ যাচ্ছেন না?’’ ইতিমধ্যেই গুজব ছড়িয়েছে যে, ৮ ফেব্রুয়ারি ভোট মিটলেই শাহিন বাগে প্রতিবাদীদের তুলে দেবে দিল্লি পুলিশ। সত্যিই কি তাই? শুধু ভোটে ফায়দা তুলতেই জিইয়ে রাখা হচ্ছে শাহিন বাগকে? রবিশঙ্করের জবাব, ‘‘সেটা দিল্লি পুলিশের বিষয়।’’