স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারে অঘোষিত ‘দুই নম্বর’ এখন অমিত শাহ। তার পরেও বিজেপি সভাপতি পদটি এখনই ছাড়ছেন না তিনি।
অনেক দিন ধরেই বিজেপিতে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নিয়ম চালু রয়েছে। অর্থাৎ, এক জন নেতা সরকার বা দলের একটি পদেই থাকতে পারবেন। সেই নিয়ম মেনে চললে সরকারের মন্ত্রী পদ পাওয়ার পরে দলের সভাপতির পদটি অমিত শাহকে যত শীঘ্র সম্ভব ছেড়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, এখনই এই পদ ছেড়ে নতুন নির্বাচন করার কোনও লক্ষণ নেই দলে। মোদীর বিগত সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নড্ডাকে যখন এ বারে মন্ত্রিসভায় শামিল করা হল না, অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন তাঁকে দলের পরবর্তী সভাপতি করতে চলেছেন মোদী-শাহ। কিন্তু দলের অনেকেই এখন বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাজে অসন্তুষ্ট বলেই প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সরিয়েছেন।
পাঁচ বছর আগে লোকসভা ভোটের আগে দলের সভাপতি ছিলেন রাজনাথ সিংহ। কিন্তু তিনি মন্ত্রী হওয়ার দু’মাসের মধ্যে অমিত শাহ তাঁর উত্তরসূরি হয়েছিলেন। বিজেপি সূত্রের মতে, এ বারেও যদি সেটি হলে এখনই তার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যেত। কিন্তু হচ্ছে উল্টোটা। কী করে অমিত শাহ দু’টি পদই রাখতে পারেন, তার পথ খোঁজা হচ্ছে। হতে পারে নিজে সভাপতি পদে থেকে অন্য কাউকে কার্যনির্বাহী সভাপতি করবেন তিনি। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মোদী-শাহ জুটি এসেছেন, তাতে তাঁদের মুখের উপর কারও কিছু বলার নেই। অদূর ভবিষ্যতে সঙ্ঘ ও দলের ভেতর থেকে চাপ আসলে তখন পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখা যাবে।’’
নতুন সরকার আসার পর শাসক জুটি যে পথে চলছে, তাতে প্রবীণ নেতারা যে একে একে গুরুত্ব হারাচ্ছেন, তা কারও নজর এড়াচ্ছে না। সুষমা স্বরাজ মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন না। অরুণ জেটলি আগেই শারীরিক কারণে সরে দাঁড়িয়েছেন। রাজনাথকে খাতায় কলমে ‘দুই নম্বর’ রেখে দিলেও অমিতেরই ওজন বাড়ছে। এমনকি আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার যে সব কমিটি তৈরি হয়েছে, তাতে নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি ছাড়া বাকিগুলিতে রাজনাথকে সামিল করা হয়নি। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েও ‘বিনিয়োগ ও বৃদ্ধি’ এবং ‘রোজগার ও দক্ষতা উন্নয়ন’ কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন অমিত শাহ।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যসভার নেতা কে হবেন? জেটলি শারীরিক ভাবে সক্ষম নন। অথচ রাজ্যসভায় তাঁর মেয়াদ রয়েছে ২০২৪-এর এপ্রিল পর্যন্ত। ফলে তাঁকে সে পদে রেখেই উচ্চকক্ষে বিরোধীদের মোকাবিলার ভার অন্য কোনও নেতাকে দেওয়া হয় কি না, সেটাই দেখার।