গুজরাত সামাল দেবেন বকলমে সেই অমিতই

ওই কুর্সিটায় বসার ইচ্ছে ছিল বহু দিনের। কিন্তু যখন সুযোগ এল, তখন পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে! আর তাই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার প্রস্তাব এলেও বুধবার তা ফিরিয়ে দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪০
Share:

ওই কুর্সিটায় বসার ইচ্ছে ছিল বহু দিনের। কিন্তু যখন সুযোগ এল, তখন পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে! আর তাই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার প্রস্তাব এলেও বুধবার তা ফিরিয়ে দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তা ছাড়া খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও চাইছেন না, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের মুখে তাঁকে হাতছাড়া করতে। সব মিলিয়ে মোদী-রাজ্যে আনন্দীবেন পটেলের শূন্য স্থানে কে বসবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হল না। তবে বকলমে গুজরাতের রাশ যে আপাতত অমিত শাহের হাতেই থাকবে, তার ইঙ্গিত মিলেছে

Advertisement

বিজেপির অন্দরে।

মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নিজের রাজ্য সামলানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন আস্থাভাজন আনন্দীবেনের হাতে। কিন্তু গত দু’বছরে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, মোদীর যথার্থ উত্তরসূরি হতে আনন্দীবেন ব্যর্থ। এই অবস্থায় রাজ্যে বিজেপির বেশির ভাগ বিধায়কই চান, গুজরাতে দলের হাল ধরুন অমিত শাহ। আর কারও পক্ষে রাজ্যের হাল ধরা সম্ভব নয়। কিন্তু বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির পদ ছেড়ে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসার প্রস্তাব আজ সরাসরি খারিজ করে দেন অমিত শাহ। আগামিকাল গুজরাতে গিয়ে বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

Advertisement

আজ সকালেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বিজেপির সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে আনন্দীবেনের ইস্তফা গ্রহণ করা হয়। তার পর তাঁকে বার্তা দেওয়া হয়, আজই রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিতে। স্থির হয়, আগামিকাল নতুন মুখ্যমন্ত্রী স্থির করা নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন অমিত শাহ। সাম্প্রতিক অতীতে বিধায়ক দলের নেতা নির্বাচনের সময় বিজেপি সভাপতিকে ছুটে যেতে দেখা যায়নি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, অমিত সেখানে গিয়ে কী করবেন? বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, সিংহভাগ বিধায়কই অমিত শাহ ছাড়া আর কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে চান না। বিজেপি সভাপতি বৈঠকে বোঝাবেন, মুখ্যমন্ত্রী যিনিই হোন, আসলে অমিত শাহই গুজরাতের বিষয়ে সরাসরি নজরদারি করবেন। সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকের পর বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, ‘‘অমিতকে বিজেপির সভাপতি পদে দরকার। তাঁর নেতৃত্বেই দলের সদস্য সংখ্যা ১১ কোটি হয়েছে। দল চায়, আগামী দিনেও তিনি নেতৃত্ব দিন। গুজরাতে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন কোনও বিধায়কই। অমিত শাহ সেখানে গিয়ে সেটি তদারকি করবেন।’’

দলের এক নেতার কথায়, ‘‘আগামিকাল গুজরাতে অমিত যাচ্ছেন শুধু মাত্র এই কথাটিই বলতে, ‘ম্যায় হু না’! মুখ্যমন্ত্রী যিনিই হোন, রাশ থাকবে অমিতের হাতেই। ফলে আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। ইতিমধ্যেই গুজরাতে ঘন ঘন যাওয়া শুরু করেছেন। সেটি আরও বাড়বে।’’ ঘনিষ্ঠ মহলে অমিত আজ বলেন, ‘‘এমন নয়, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বাসনা আমার কোনও দিন ছিল না। এক সময় আমি সত্যিই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গিয়েছি। এখন আরও বড় দায়িত্ব পেয়েছি। সামনে উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যের দায়িত্ব। তার পর লোকসভা নির্বাচনে ফের মোদীকে ক্ষমতায় আনার দায়িত্ব রয়েছে। ফলে এখন আর গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়।’’

নতুন মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিজয় রূপাণি আজ বলেন, তিনি সংগঠনের দায়িত্বেই থাকতে চান। ফলে এখন সম্ভাবনা বেশি নিতিন পটেলের। পটেল আন্দোলনের পর বিজেপি এই বার্তা দিতে চায় না, আনন্দীবেনকে সরিয়ে আর কোনও পটেলকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হচ্ছে না। তবে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেটি স্পষ্ট হবে আগামিকাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement